সুমেরু অঞ্চলে অভিযান: পোলার ভাল্লুকের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই, বাচঁলেন হাঁড়ি দিয়ে!
আর্টিক সাগরে অভিযান চালানো এক দুঃসাহসী অভিযাত্রীর পোলার ভাল্লুকের সঙ্গে এক বিরল অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকার গল্প। ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৯০ সালে, যখন তিনি নরওয়ের অন্তর্ভুক্ত স্বালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের স্পিটসবার্গেন-এর পূর্ব উপকূল ধরে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। বরফের রাজ্যে তখন এক অন্যরকম পরিস্থিতি।
অভিযাত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি তখন সবে ২৯ বছরের তরুণ। উত্তর মেরুর কাছাকাছি অঞ্চলে অভিযানে গিয়েছিলেন। হঠাৎ তার ঘুম ভেঙে যায়। দেখেন, তাঁবুর খুব কাছেই একটা বিশাল পোলার ভাল্লুক! নিজের জীবন বাঁচাতে তখন তিনি যা করলেন, তা সত্যিই অভাবনীয়।
অভিযাত্রীর সঙ্গে সবসময় একটি বন্দুক ছিল, যা ভাল্লুক তাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হতো। কিন্তু ঘটনার সময় বন্দুকটি তার নাগালের বাইরে ছিল। তখন তিনি মাকে দেওয়া একটি পুরনো, ভারী ডেকচি (bangla word for saucepan) হাতে তুলে নেন।
এরপর?
তিনি বর্ণনা করেন, “আমি তাঁবুর মুখটা ধরে ভাল্লুকটির দিকে তাকিয়ে আঘাত করি। ভাল্লুকটি প্রথমে কিছুটা অবাক হয়েছিল, যেন কি হচ্ছে বুঝতে পারছিল না। এরপর সে দিক পরিবর্তন করে দ্রুত চলে যায়।”
অভিযাত্রী জানান, আর্কটিকে পোলার ভাল্লুকের কাছাকাছি আসাটা খুবই বিপদজনক। ভাল্লুক ক্ষুধার্ত হলে শিকারের সন্ধানে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারে। তাই তাদের সম্মান করা এবং তাদের পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি আরও বলেন, “আমি সবসময় মনে করি, মানুষ হিসেবে আমাদের সেখানে (আর্টিক) থাকার অধিকার তাদের (ভাল্লুক) চেয়ে কম। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আর্কটিক অঞ্চলের বরফ দ্রুত গলছে, যা তাদের (ভাল্লুক) জীবন ধারণের জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করছে।
অভিযাত্রীর মতে, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে পারাটা জরুরি। তরুণ বয়সে তিনি প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়ার মানসিকতা পোষণ করতেন। কিন্তু পরে তিনি উপলব্ধি করেন, প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করাই আসল। একসময় তিনি একাই উত্তর মেরু পর্যন্ত হেঁটে গিয়েছিলেন, যা আজও একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
এই ঘটনার মাধ্যমে অভিযাত্রী শুধু নিজের জীবন বাঁচাননি, বরং প্রকৃতি এবং বন্যপ্রাণীদের প্রতি ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান