নতুন পোপ, লিও চতুর্দশ, এর রয়েছে ক্রেওল বংশগত পরিচয়, যা তার ভাইয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। এই খবরটি এখন সারা বিশ্বে আলোচনার বিষয়।
সম্প্রতি নির্বাচিত হওয়া এই পোপের আসল নাম রবার্ট ফ্রান্সিস প্রভোস্ট। তিনি যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, তা সবাই জানেন।
তবে সম্প্রতি জানা গেছে, তার মায়ের দিকের পূর্বপুরুষরা ছিলেন নিউ অরলিন্সের বাসিন্দা, যাদের মধ্যে মিশ্র স্প্যানিশ, ফরাসি এবং কৃষ্ণাঙ্গদের সংমিশ্রণ ছিল।
পোপের ভাই জন প্রভোস্ট, নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে কথা বলার সময় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পারিবারিক ইতিহাসবিদ জারি সি. অনোরার গবেষণা অনুযায়ী, পোপের মায়ের পরিবার একসময় নিউ অরলিন্সে বাস করত। পরে তারা শিকাগোতে চলে যান।
পোপের মা মিলড্রেড মারটিনেজ প্রভোস্টের জন্ম হয় ১৯১২ সালে শিকাগোতে।
ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, এই ক্রেওল বংশের মানুষেরা মূলত মিশ্র সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তাদের মধ্যে বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণ দেখা যায়।
অনোরার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মিলড্রেডের বাবা-মা’র বিবাহের প্রমাণপত্র এবং তাদের সমাধিস্থলের ছবিও রয়েছে।
১৯০০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, মিলড্রেডের বাবা-মাকে নিউ অরলিন্সের একটি অঞ্চলে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাদের পেশা ছিল সিগার তৈরি করা।
ঐতিহাসিকরা মনে করেন, এই পরিবারটি গৃহযুদ্ধের আগে পর্যন্ত ‘মুক্ত’ জীবন যাপন করত। পরে তারা যখন শিকাগোতে পাড়ি জমায়, তখন শ্বেতাঙ্গ সমাজে নিজেদের পরিচয় গোপন করে।
এই বিষয়ে জন প্রভোস্ট বলেছেন, তাদের পরিবারের মধ্যে এই ক্রেওল পরিচয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, কারণ এটি তাদের কাছে কোনো সমস্যা ছিল না।
নিউ অরলিন্স শহর কর্তৃপক্ষ এই খবরকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা মনে করে, এই ঘটনা শহরের বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে একতা বাড়াবে।
নিউ অরলিন্সের মেয়র লাতোয়া কান্ট্রেল বলেছেন, “আমরা পোপ লিও চতুর্দশকে স্বাগত জানাতে পেরে আনন্দিত, যিনি নৈতিকতা, ঐক্য এবং অন্তর্ভুক্তির প্রতীক।
এই ঘটনা প্রমাণ করে, বিশ্বায়নের যুগে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে।
পোপের এই পরিচয় শুধু ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের কাছেই নয়, বরং সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এক নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন