ভ্যাটিকান সিটিতে চলছে গোপন বৈঠক, নতুন পোপ নির্বাচনের লক্ষ্যে দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি বেছে নিতে ১৩৩ জন কার্ডিনাল এই কনক্লেভে অংশ নিচ্ছেন।
বুধবার বিকেলে এই প্রক্রিয়া শুরু হলেও প্রথম দফা ভোটের পর কালো ধোঁয়া বের হওয়ায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপির।
সাধারণত, কোনো পোপের মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরসূরি নির্বাচনের জন্য এই কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হয়। পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়।
কার্ডিনালরা বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যান এবং ভোট গ্রহণের স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় সিস্টিন চ্যাপেলকে। সেখানে তাঁরা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নতুন পোপ নির্বাচন করেন। এই প্রক্রিয়ায় বাইরের কোনো হস্তক্ষেপের সুযোগ থাকে না।
ভোটের ফলাফল জানানোর জন্য সাদা বা কালো ধোঁয়ার সংকেত ব্যবহার করা হয়। যদি কোনো প্রার্থী দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান, অর্থাৎ ৮৯টি ভোট পান, তবে সাদা ধোঁয়া নির্গত করা হয় এবং নতুন পোপ নির্বাচিত হন। অন্যদিকে, কোনো ফলাফল না হলে কালো ধোঁয়া বের হয়।
এই কনক্লেভের সময়কালের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যায় না। তবে ইতিহাসে দীর্ঘতম কনক্লেভ প্রায় তিন বছর ধরে চলেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এবারের কনক্লেভ তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত হতে পারে।
সাধারণত, গত একশ বছরে পোপ নির্বাচনের জন্য তিন থেকে আটটি ব্যালট লাগে।
নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তাঁর জন্য একটি নাম নির্বাচন করেন। এরপর তাঁকে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার বারান্দা থেকে ঘোষণা করা হয়, “আনুনসিও ভোবিস গাউডিয়াম মাগ্নাম: হাবেমাস প্যাপাম!” অর্থাৎ, “আমি তোমাদের মহান আনন্দের সংবাদ দিচ্ছি: আমাদের একজন পোপ আছেন!”
ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হিসেবে পোপের ভূমিকা শুধু ধর্মীয় গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব থাকে।
জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের মতো বিষয়গুলোতে পোপের বক্তব্য বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর, তিনি কোন পথে হাঁটবেন, তাঁর নামের মাধ্যমে সেই ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে।
পোপ নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া যুগ যুগ ধরে চলে আসা এক ঐতিহ্য। এটি ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা, যা বিশ্বজুড়ে মানুষের মনে আগ্রহ তৈরি করে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।