পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে সমাজের প্রান্তিক মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি
গত ২৬শে এপ্রিল, শনিবার, প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে এক বিরল দৃশ্য দেখা যায়। ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট মেরী মেজর ব্যাসিলিকায় সমবেত হয়েছিলেন সমাজের প্রান্তিক কিছু মানুষ।
এদের মধ্যে ছিলেন গরিব, homeless বা আশ্রয়হীন, কারাবন্দী, অভিবাসী এবং রূপান্তরকামী (transgender) সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০ জন সদস্য। পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষে, তাদের এই উপস্থিতি যেন এক বিশেষ বার্তা বহন করে।
পোপ ফ্রান্সিস তাঁর জীবদ্দশায় সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের প্রতি গভীর মনোযোগ দিয়েছিলেন। তিনি প্রায়ই বলতেন, ঈশ্বরের চোখে সবাই সমান।
তাই, শেষ বিদায়ের মুহূর্তেও তিনি চেয়েছিলেন, সমাজের এই অবহেলিত মানুষেরা যেন তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে পারে। তাঁর এই ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়েছিল ভ্যাটিকান কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছিল একটি করে সাদা গোলাপ।
এই প্রসঙ্গে বিশপ অ্যাম্বারাস বলেন, “আমি মনে করি, এটা খুবই আবেগপূর্ণ একটা মুহূর্ত ছিল। কারণ, পোপ ফ্রান্সিসকে বিদায় জানানোর জন্য এসেছিলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয়জনেরা।”
পোপ ফ্রান্সিসের এই মানবিক দিকটি শুধু শেষকৃত্যের মাধ্যমেই প্রকাশ পায়নি। তিনি তাঁর পুরো কর্মজীবনে দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের পাশে ছিলেন।
তিনি প্রায়ই তাঁদের সঙ্গে মিশে যেতেন এবং তাঁদের দুঃখ-কষ্টের কথা শুনতেন। উদাহরণস্বরূপ, পবিত্র বৃহস্পতিবার তিনি অভিবাসী ও কারাবন্দীদের পা ধুয়ে দেওয়ার মতো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
পোপের এই ধরনের কাজগুলি তাঁর উদার মানসিকতা এবং সমাজের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসার প্রমাণ। তিনি চেয়েছিলেন, সমাজের কোনো মানুষ যেন একাকীত্বে না ভোগে এবং সবাই যেন ঈশ্বরের ভালোবাসার অংশীদার হতে পারে।
তাঁর এই মহানুভবতা আজও মানুষের মনে গেঁথে আছে।
পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে অনেক সাধারণ মানুষও বলেছিলেন, তাঁর মানবিক গুণাবলী তাঁদের গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে।
তাঁরা জানান, পোপের সহানুভূতি এবং ভালোবাসাই ছিল তাঁদের কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে, আমরাও যেন সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি এবং তাঁদের প্রতি আমাদের সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিতে পারি।
তথ্য সূত্র: পিপলস