পোপের শেষকৃত্যে: ট্রাম্প, আসাঞ্জসহ কারা ছিলেন?

পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দিতে বিশ্বনেতাদের ঢল, আলোচনায় ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক।

ভ্যাটিকানে অনুষ্ঠিত হওয়া পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দুই লক্ষাধিক মানুষ। এই শোকানুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। খবর অনুযায়ী, শনিবারের এই অনুষ্ঠানে প্রায় ৫৫ জন দেশের প্রধান অংশ নিয়েছিলেন।

অনুষ্ঠানের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সেন্ট পিটার্স স্কোয়ার। এই বিশাল চত্বরে শোকাহত মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শেষকৃত্যের কয়েক মিনিট আগে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়, যা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

বৈঠক শেষে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এটিকে ফলপ্রসূ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। খবর অনুযায়ী, দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিটের মতো কথা হয়। জেলেনস্কি এই সাক্ষাতকে তাৎপর্যপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ ফলাফলের সম্ভাবনাপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা না গেলেও, এটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনুষ্ঠানে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্তাব এর সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল, যা মার্চ মাসে ফ্লোরিডায় তাদের একটি গলফ খেলার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, তারা ইউরোপের নিরাপত্তা এবং ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দেশের রাজপরিবারের সদস্যরাও। ব্রিটেনের প্রিন্স উইলিয়াম, জার্মানির বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ, স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেটিজিয়া, এবং ডেনমার্কের রানি মেরির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এছাড়াও পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুদা এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের মতো নেতারাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

শুধু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই নন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরাও এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস-এর উপস্থিতি ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

পোপের শেষকৃত্যে আরও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। উইকিলিকস-এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তানের সঙ্গে ভ্যাটিকানে দেখা যায়। জানা গেছে, কারামুক্তির পর এই প্রথম জনসম্মুখে দেখা গেল তাঁকে। অ্যাসাঞ্জের পরিবারের পক্ষ থেকে পোপ ফ্রান্সিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়, যিনি অ্যাসাঞ্জের মুক্তির জন্য সমর্থন জুগিয়েছিলেন।

পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণে শুধু ক্যাথলিক সম্প্রদায় নয়, বরং বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধর্ম ও মতের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। তাঁর শেষকৃত্যে বিভিন্ন দেশের নেতাদের উপস্থিতি বিশ্বশান্তি ও ঐক্যের বার্তা বহন করে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *