প্রথম মার্কিন পোপ: নতুন পোপের প্রথম ভাষণে বিশ্বজুড়ে আলোচনা!

নতুন পোপ নির্বাচিত: প্রথমবারের মতো উত্তর আমেরিকান হিসেবে পোপ লিও চতুর্দশ-এর অভিষেক

ভ্যাটিকান সিটি থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি ক্যাথলিক চার্চের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক রবার্ট প্রিভোস্ট, যিনি এখন পোপ লিও চতুর্দশ নামে পরিচিত, তিনি পোপ ফ্রান্সিসের স্থলাভিষিক্ত হয়ে এই গুরুদায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

পোপ নির্বাচনের ইতিহাসে এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা, কারণ এর আগে কোনো উত্তর আমেরিকান নাগরিককে পোপ হিসেবে নির্বাচিত করা হয়নি।

পোপ লিও চতুর্দশ-এর জন্ম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে, এবং তিনি ৬৯ বছর বয়স্ক।

তিনি অগাস্টিনিয়ান মিশনারি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

পেরুতে দীর্ঘদিন মিশনারি হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এমনকি তিনি পেরুর নাগরিকও।

গত কয়েক দশক ধরে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, যা তাঁকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে সহায়তা করেছে।

পোপ নির্বাচনের পর সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার বারান্দায় এসে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণ দেন।

ভাষণে তিনি বিশ্বজুড়ে শান্তি ও ঐক্যের বার্তা দেন।

তিনি ইতালীয় এবং স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন, যা তাঁর বহুমাত্রিক পরিচিতির প্রমাণ।

নতুন পোপ হিসেবে তাঁর প্রথম ভাষণ ছিলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি সবাইকে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান, যাতে চার্চ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।

পোপ ফ্রান্সিস এর আগে প্রিভোস্টকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

২০১৪ সালে তিনি প্রিভোস্টকে পেরুর একটি জটিল ডাইওসেস-এর দায়িত্ব দেন।

পরবর্তীতে ২০২৩ সালে তাঁকে ভ্যাটিকানে ফিরিয়ে আনা হয় এবং বিশপ বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ করা হয়।

এই পদে থেকে তিনি বিশ্বজুড়ে বিশপদের মনোনয়ন দেওয়ার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

পোপ লিও চতুর্দশ-এর নাম নির্বাচনও তাৎপর্যপূর্ণ।

তিনি ‘লিও’ নামটি গ্রহণ করেছেন, যা ১৩ শতকের সন্ন্যাসী সেন্ট ফ্রান্সিস অফ অ্যাসিজির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এমন একজনের প্রতি শ্রদ্ধা স্বরূপ।

এই নামকরণের মাধ্যমে তিনি যেন পোপ ফ্রান্সিসের সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

পোপ লিও চতুর্দশ-এর নির্বাচনকে অনেকে অপ্রত্যাশিত হিসেবে দেখছেন, কারণ এর আগে কোনো মার্কিন নাগরিককে পোপ হিসেবে নির্বাচিত করার চল ছিল না।

তবে তাঁর পেরুর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং সেখানে মিশনারি হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা, তাঁকে এই পদে নিয়ে আসতে সহায়তা করেছে।

এই নির্বাচনের পর অনেকেই মনে করছেন, নতুন পোপ সম্ভবত পোপ ফ্রান্সিসের নীতিগুলিকেই অনুসরণ করবেন।

বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের প্রতি তাঁর মনোযোগ থাকবে, যা ইতিমধ্যেই তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সম্মানের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

পোপ লিও চতুর্দশ-এর ভবিষ্যৎ কার্যক্রম সম্পর্কে এখনো অনেক কিছু জানার বাকি আছে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি চার্চের মধ্যে বিভেদ দূর করতে এবং ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিতে কাজ করবেন।

খুব সম্ভবত, তিনি তুরস্ক সফরে যেতে পারেন, যেখানে খ্রিস্টান ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা, ‘প্রথম নাইসীয় কাউন্সিল’-এর ১,৭০০ তম বার্ষিকী উদযাপন করা হবে।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *