পোপ লিও চতুর্দশের প্রথম ভাষণে যা বললেন: আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘোষণা!

পোপ লিও চতুর্দশ-এর প্রথম ভাষণে উঠে এল বিশ্বাস, ক্ষমতা আর মিশনারি কাজের কথা।

ভ্যাটিকান সিটি থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, নতুন নির্বাচিত পোপ লিও চতুর্দশ তাঁর প্রথম ভাষণে তুলে ধরেছেন বিশ্বাস, ক্ষমতা এবং মিশনারি কাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় আয়োজিত এই ভাষণে তিনি ক্যাথলিক চার্চের প্রধান হিসেবে তাঁর দায়িত্বের কথা উল্লেখ করেন, পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরেন।

পোপ লিও চতুর্দশ, যিনি আগে কার্ডিনাল রবার্ট প্রোভোস্ট হিসেবে পরিচিত ছিলেন, ভাষণে প্রথমে তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, তিনি ঈশ্বরের ডাকে সাড়া দিয়ে এই গুরু দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, চার্চকে আরও দৃঢ়ভাবে একটি “আলোর স্তম্ভ” হিসেবে গড়ে তুলতে চান, যা ইতিহাসের ঢেউয়ের মধ্যে “মুক্তির তরী” হিসেবে কাজ করবে। তাঁর মতে, চার্চের সৌন্দর্য বা বিশালতা নয়, বরং এর সদস্যদের পবিত্রতাই আসল বিষয়।

ভাষণে পোপ বিশেষভাবে জোর দেন বিশ্বাসের ওপর। তিনি বলেন, আজকের বিশ্বে এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যেখানে খ্রিস্টান ধর্মকে দুর্বল ও নির্বোধদের জন্য একটি বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রযুক্তি, অর্থ, সাফল্য এবং ক্ষমতার মতো বিষয়গুলো বিশ্বাসের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। এমন পরিবেশে সুসমাচার প্রচার করা কঠিন, যেখানে বিশ্বাসীদের উপহাস করা হয়, তাদের বিরোধিতা করা হয় অথবা উপেক্ষা করা হয়।

এই পরিস্থিতিতেই মিশনারি কাজের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। কারণ, বিশ্বাসের অভাব জীবনের অর্থহীনতা, দয়া ও মানব মর্যাদার অবমূল্যায়ন এবং পারিবারিক সংকটসহ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপর্যয় ডেকে আনে।

পোপ যিশুকে শুধুমাত্র একজন “আকর্ষণীয় নেতা” বা “সুপারম্যান”-এর মতো করে দেখা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, অনেক সময় অবিশ্বাসী এবং দীক্ষিত খ্রিস্টানদের মধ্যেও এই ধরনের ধারণা দেখা যায়, যা আধ্যাত্মিকতার পরিবর্তে জাগতিকতার প্রতি বেশি আকৃষ্ট করে।

পোপ লিও চতুর্দশ তাঁর ভাষণে মিশনারি কাজের গুরুত্বের ওপর বিশেষ আলোকপাত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পেরুতে দীর্ঘদিন মিশনারি হিসেবে কাজ করার সময় তিনি মানুষের মাঝে বিশ্বাসের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তাঁর এই অভিজ্ঞতা তাঁকে বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে সাহায্য করেছে।

ভাষণে তিনি ইংরেজি, ইতালীয় এবং স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলেন, যা ক্যাথলিক চার্চের বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতির একটি প্রতীক। তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ঈশ্বরের আশীর্বাদকে উপলব্ধি করতে পারে এবং এই মহৎ কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *