নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার পর, পোপ লিও চতুর্দশ তাঁর প্রথম জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। গত শুক্রবার, ৯ই মে তারিখে ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলে এই বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ১৩০ জনের বেশি কার্ডিনাল।
এই অনুষ্ঠানে নতুন পোপের বক্তব্যে উঠে আসে একতাবদ্ধভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা এবং চার্চের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাঁর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা।
পোপ লিও চতুর্দশ, যিনি রবার্ট ফ্রান্সিস প্রিভোস্ট নামেও পরিচিত, তিনি পেরু-আমেরিকান বংশোদ্ভূত এবং শিকাগোতে তাঁর জন্ম। ৬৯ বছর বয়সী এই নতুন পোপের আগে বিশপ অফ চিকলাও, বিশপদের বিষয়ক বিভাগের প্রিফেক্ট এবং কার্ডিনাল হিসাবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
তিনি আমেরিকার প্রথম পোপ এবং অগাস্টিনিয়ান অর্ডারের প্রথম পোপ নির্বাচিত হয়েছেন। পোপ হওয়ার আগে তিনি ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চিকলাওয়ের বিশপ ছিলেন। তাঁর পূর্বসূরি ছিলেন প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস।
সিস্টিন চ্যাপেলে অনুষ্ঠিত প্রথম প্রার্থনাসভায় পোপ লিও বেদীতে চুম্বন করেন এবং ধূপ জ্বালিয়ে পুরো এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। এরপর তিনি ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রার্থনা করেন এবং সমবেত সকলের সাথে প্রার্থনা ও স্তুতিতে যোগ দেন।
কার্ডিনালদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আপনারা সবাই আমার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যিশুর অনুসারী হিসেবে সুসংবাদ প্রচার করবেন।” তিনি আরও যোগ করেন, “আজও এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে খ্রিস্টান ধর্মকে দুর্বল এবং নির্বোধদের জন্য তৈরি একটি বিষয় হিসাবে দেখা হয়।”
এই প্রেক্ষাপটে তিনি মিশনারি কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন, যেখানে প্রযুক্তি, অর্থ, ক্ষমতা এবং আনন্দের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেশি।
পোপ লিও তাঁর ভাষণে শান্তি ও ভালো কাজের বার্তা দেন এবং চার্চের মধ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, “আমাদের একটি সিনডাল চার্চ হতে হবে। এমন একটি চার্চ যা সবসময় শান্তির অন্বেষণ করে, সবসময় দয়া দেখায় এবং বিশেষ করে যারা কষ্ট ভোগ করে তাদের পাশে থাকে।”
পোপ লিও চতুর্দশের বন্ধু ফাদার অ্যালেজান্দ্রো মোরাল আন্তোনের মতে, নতুন পোপ একজন “ভারসাম্যপূর্ণ এবং আধ্যাত্মিক” ব্যক্তি, যিনি “সবাইকে ভালোবাসেন।” ফাদার আন্তোন আরও জানান, পোপের এই নাম বেছে নেওয়ার কারণ সম্ভবত পোপ লিও ত্রয়োদশের প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধা।
পোপ লিও ত্রয়োদশ শ্রমিক শ্রেণির অধিকারের পক্ষে জোরালোভাবে সমর্থন জুগিয়েছিলেন। ফাদার আন্তোনের মতে, পোপ লিও চতুর্দশের প্রথম ভাষণ তাঁর ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের ইঙ্গিত বহন করে।
তথ্যসূত্র: পিপল ম্যাগাজিন।