**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া পোপ লিও ১৪-কে নিয়ে রিপাবলিকান পরিচয় বিতর্কের সৃষ্টি**
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আলোচনা শুরু হয়েছে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া নতুন পোপ লিও ১৪ (যিনি রবার্ট প্রিভোস্ট নামেও পরিচিত) কে রিপাবলিকান দলের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই বিতর্কের সূত্রপাত হওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, রক্ষণশীল মহলের প্রভাবশালী ব্যক্তি চার্লি কার্কের একটি পোস্টের মাধ্যমে জানা যায়, টার্নিং পয়েন্ট অ্যাকশন নামক একটি দল পোপ লিও ১৪-এর ভোটিং ইতিহাস পর্যালোচনা করেছে। তাদের দাবি, তিনি একজন নিবন্ধিত রিপাবলিকান এবং বিদেশে বসবাস না করার সময় রিপাবলিকান প্রাইমারিগুলোতে ভোট দিয়েছেন।
এরপর অনেকেই প্রিভোস্টকে ‘নিবন্ধিত রিপাবলিকান’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তবে, অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রিভোস্ট ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের উইল কাউন্টিতে নিবন্ধিত ভোটার। গত ১৩ বছর ধরে তিনি সেখানে ভোট দিয়েছেন। তবে, ইলিনয়ে ভোটারদের দলীয় পরিচয় উল্লেখ করার প্রয়োজন হয় না।
তারা কেবল প্রাইমারিতে ভোট দেওয়ার সময় একটি দলের প্রতি নিজেদের সমর্থন জানান। রাজ্যের নির্বাচন বোর্ডের একটি ভিডিওতে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে।
ভিডিওতে বলা হয়েছে, প্রাইমারিতে একটি দলের হয়ে ভোট দিলেও, পরবর্তী নির্বাচনে অন্য কোনো দলের প্রতি সমর্থন জানানোর স্বাধীনতা রয়েছে।
অন্যদিকে, উইল কাউন্টি ক্লার্কের অফিস পলিটিফ্যাক্টকে প্রিভোস্টের ভোটার-সংক্রান্ত তথ্য সরবরাহ করেছে। সেই তথ্যে দেখা যায়, তার দলীয় পরিচয় ‘অনির্ধারিত’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৬ সালের রিপাবলিকান প্রাইমারিগুলোতে ভোট দিয়েছেন। এমনকি ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনেও তিনি ‘অনির্ধারিত’ দলীয় পরিচয় দিয়ে ভোট দিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলো এসেছে এল২ নামক একটি ডেটাবেস থেকে, যেখানে গ্রাহক এবং ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এল২-এর প্রোফাইলে প্রিভোস্টের দলীয় পরিচয় ‘রিপাবলিকান’ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
তবে, ইলিনয়ের মতো রাজ্যে যেখানে দলীয় পরিচয় ভোটার নিবন্ধনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না, সেখানে এল২ কীভাবে এই তথ্য সংগ্রহ করে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে এল২ কর্তৃপক্ষের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পোপ লিও ১৪-এর জন্ম ১৯৫৫ সালে, শিকাগোর শহরতলিতে। ১৯৮২ সালে তিনি যাজক হন এবং ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত পেরুতে বসবাস করেন।
১৯৯৯ সালে তিনি শিকাগোতে ফিরে আসেন এবং ‘মাদার অফ গুড কাউন্সিল’ নামক আগস্টিনিয়ান প্রদেশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রিভোস্টের ভোটার তালিকায় তার ঠিকানা হিসেবে তার ভাই জন প্রিভোস্টের বাড়ির ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পোপের ভোটিং ইতিহাস থেকে তার রাজনৈতিক বা আদর্শিক অবস্থান সম্পর্কে সরাসরি কোনো ধারণা করা যায় না। কারণ, তিনি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট প্রাইমারিতে রিপাবলিকান প্রার্থীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
এই বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে পলিটিফ্যাক্ট এই দাবির সত্যতা যাচাই করে এটিকে ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মিথ্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কারণ, এতে কিছু তথ্য সত্য হলেও, গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়কে উপেক্ষা করা হয়েছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা