নতুন পোপ নির্বাচিত: কার্ডিনাল রবার্ট প্রিভোস্ট এখন পোপ লিও চতুর্দশ।
ভ্যাটিকান সিটি থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের পর নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন কার্ডিনাল রবার্ট প্রিভোস্ট। তিনি এখন পোপ লিও চতুর্দশ নামে পরিচিত হবেন।
এই প্রথম কোনো মার্কিন নাগরিক ক্যাথলিক চার্চের সর্বোচ্চ পদে আসীন হলেন।
পোপ নির্বাচনের জন্য কার্ডিনালদের গোপন বৈঠক বা কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হয় ভ্যাটিকানে। এই কনক্লেভে ১৩৩ জন কার্ডিনাল ভোট দেন, যা ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
নির্বাচনের দ্বিতীয় দিনে সিস্টিন চ্যাপেল থেকে সাদা ধোঁয়া বের হয়, যা নতুন পোপ নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয়। এরপর সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার বারান্দায় এসে প্রথম ভাষণ দেন নতুন পোপ।
ভাষণে পোপ লিও চতুর্দশ প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, “শান্তি তোমাদের সঙ্গে থাকুক”। তিনি আরও যোগ করেন, “ঈশ্বর আমাদের ভালোবাসেন, তিনি সবাইকে ভালোবাসেন। অশুভ শক্তি জয়ী হবে না।”
নতুন পোপ রবার্ট প্রিভোস্ট ১৯৫৫ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর, যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একইসঙ্গে পেরুরও নাগরিক।
পড়াশোনা করেছেন ভিলানোভা ইউনিভার্সিটিতে, যেখানে তিনি গণিত বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি শিকাগোর ক্যাথলিক থিওলজিক্যাল ইউনিয়ন থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন এবং একই বছর পুরোহিত হন।
এরপর ১৯৮৪ সালে তিনি রোমের পন্টিফিক্যাল কলেজ অফ সেন্ট টমাস অ্যাকুইনাস থেকে ক্যানন ল’তে (Canon Law) ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ২০১৪ সালে ভিলানোভা ইউনিভার্সিটি তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।
পোপ ফ্রান্সিস ২০১৯ সালে প্রিভোস্টকে কার্ডিনাল হিসেবে নিয়োগ দেন। এর আগে তিনি পেরুর চিকলায়ো শহরের বিশপ এবং অগাস্টিনিয়ান অর্ডারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বর্তমানে বিশপ বিষয়ক ডিক্যাস্টেরির প্রিফেক্ট এবং পোপের লাতিন আমেরিকা বিষয়ক কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
পোপ নির্বাচনের পর দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, লাতিন আমেরিকায় মিশনারি বিশপ হিসেবে কাজ করার পর, বিশপদের বাছাইয়ের দায়িত্ব পাওয়াটা তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।
পোপ হিসেবে নতুন নাম নেওয়ার একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। পোপ ফ্রান্সিসের আগে পোপ বেনেডিক্টও এই কাজটি করেছিলেন।
পোপ লিও চতুর্দশ নামটি সেই ধারারই একটি অংশ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পোপ লিও চতুর্দশ বিভিন্ন সময়ে এমন কিছু ‘বিশ্বাস ও রীতিনীতি’র সমালোচনা করেছেন যা বাইবেলের শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তিনি সমকামিতা এবং ‘বৈকল্পিক পরিবার’ ধারণা নিয়েও তার উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন।
পেরুর বিশপ থাকাকালীন তিনি স্কুলে জেন্ডার শিক্ষা বিষয়ক একটি সরকারি পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছিলেন।
তবে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের প্রতি সমর্থন জানানোর জন্য তিনি প্রশংসিত হয়েছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল
