পোপ লিও চতুর্দশ মিথ্যা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সংস্থাগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার ওপর জোর দেন এবং সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। খবরটি এসেছে ভ্যাটিকান সিটি থেকে।
সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে পোপ বলেন, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোকে মিথ্যা তথ্যের বিস্তার এবং কারসাজির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি সাংবাদিকদের কারাবন্দী করাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার তীব্র বিরোধিতা করেন এবং গণমাধ্যমকে সমাজের ভিত্তি হিসেবে বর্ণনা করেন, যা রক্ষা করা অপরিহার্য।
পোপ বলেন, “গাজায়, ইউক্রেনে কিংবা বোমা হামলায় রক্তাক্ত অন্য যেকোনো স্থানে কী ঘটছে, তা যদি আমরা জানতে পারি, তবে এর প্রধান কৃতিত্ব সাংবাদিকদের।” তিনি আরও যোগ করেন, “এই অসাধারণ প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণগুলো সেইসব মানুষের দৈনিক প্রচেষ্টার ফল, যারা তথ্যকে সত্য ও মানুষের মর্যাদার পরিপন্থী উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে বাধা দেন।”
পোপ লিও’র এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে, যখন সংবাদ সংস্থাগুলো অর্থনৈতিক চাপ ও জনসাধারণের মধ্যে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার অক্ষমতা সহ নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি সংবাদ সংস্থাগুলোকে তাদের ‘কর্তৃত্ব’ কখনও বিক্রি না করার আহ্বান জানান।
হানা আরেন্দের ‘দ্য অরিজিনস অফ টোটালিটারিয়ানিজম’ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে পোপ বলেন, বিশ্বের মুক্ত ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের প্রয়োজন। আরেন্দের এই সতর্কতাকে তিনি সমর্থন করেন যে, “একটি স্বৈরাচারী শাসনের আদর্শ বিষয় হলো সেই ব্যক্তি, যার কাছে সত্য ও মিথ্যার মধ্যেকার পার্থক্য আর অবশিষ্ট নেই।”
বর্তমান সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্থান বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে পোপ সংবাদ সংস্থাগুলোকে তাদের অবস্থানে অবিচল থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আপনাদের ধৈর্যশীল ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে, আপনারা মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন, যা বিভাজন তৈরি করে শাসনের চেষ্টা করে। আপনারা বিভ্রান্তি ও তথ্যের বিকৃতির বিরুদ্ধেও একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করতে পারেন।”
পোপ লিও চতুর্দশ তার পাঁচ মাসের দায়িত্বকালে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর বারবার গুরুত্বারোপ করেছেন। সাংবাদিকদের প্রতি তার এই সমর্থন একটি শক্তিশালী, স্বাধীন ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশের গুরুত্বের কথাই তুলে ধরে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।