পোর্ট সুদানে বোমা হামলা: মানবিক সহায়তা সরবরাহের পথ বিপর্যস্ত, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বাড়ছে
সুদানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর পোর্ট সুদানে গত চার দিন ধরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটছে। এই হামলার কারণে দেশটিতে মানবিক সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। সুদানে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে এরই মধ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে এবং দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আধা-সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে এই হামলা চলছে। সুদানের সেনাবাহিনী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা হামলার জন্য আরএসএফকে দায়ী করছে। সেনাবাহিনীর একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, বুধবার সকালে ড্রোন হামলার জবাব দিতে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
পোর্ট সুদান লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত এবং এটি উদ্বাস্তুদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে আসছিল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখানে কয়েক লক্ষ বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও, এটি সুদানের সামরিক-সমর্থিত সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সদর দফতর হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে।
জাতিসংঘ (ইউএন) পোর্ট সুদানকে মানবিক কার্যক্রমের জন্য “জীবনরেখা” হিসেবে বর্ণনা করেছে এবং সতর্ক করে বলেছে, হামলার কারণে “ইতিমধ্যেই বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট”-এ আরও বেশি “মানবিক দুর্ভোগ” বাড়বে। জাতিসংঘের মতে, সুদানে আসা প্রায় সব সাহায্য পোর্ট সুদান হয়েই আসে।
সুদানের তথ্যমন্ত্রী খালিদ আল-ইসার মঙ্গলবার বন্দরের দক্ষিণাঞ্চল পরিদর্শন করেন এবং আরএসএফকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (ইউএই) অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের ন্যায্য লড়াই চালিয়ে যাব।” এর প্রতিক্রিয়ায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসিন ইব্রাহিম ঘোষণা করেছেন যে সরকার ইউএইর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করছে এবং উপসাগরীয় দেশটিতে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “পুরো বিশ্ব গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে সন্ত্রাসী আরএসএফ মিলিশিয়ার মাধ্যমে সুদানের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং নাগরিকদের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ইউএই-এর আগ্রাসনের প্রমাণ দেখেছে।”
তবে, ইউএই বরাবরই আরএসএফকে সমর্থন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) সোমবার সুদানের করা একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে। সুদানে অভিযোগ করেছিল, ইউএই আরএসএফকে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করে জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। আদালত এই বিষয়ে তাদের এখতিয়ার নেই বলে জানায়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা