যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে ড্রোন হামলা: বন্দর সুদানে কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি?

পোর্ট সুদানে ড্রোন হামলা, খাদ্য সংকটে জর্জরিত সুদান: মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা।

সুদানের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত পোর্ট সুদানে গত কয়েক দিন ধরে চলা ড্রোন হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার শহরটির বিমানবন্দর এবং সেনা ঘাঁটিতে আঘাত হানে ড্রোনগুলো। এর আগে সোমবার শহরের প্রধান জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালানো হয়, যার ফলে বিশাল অগ্নিকাণ্ড দেখা দেয়।

এই হামলার পেছনে সুদানের সেনাবাহিনী বিরোধী আধা-সামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করা হচ্ছে।

পোর্ট সুদানের বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ড্রোন হামলায় বিমানবন্দরের বেসামরিক অংশে আঘাত হেনেছে। হামলার কারণে বিমানবন্দরের সকল ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া, শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত সেনা ঘাঁটিতেও ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলে আঘাত হেনেছে ড্রোন।

এই হামলার ফলে মানবিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কারণ, পোর্ট সুদানে জাতিসংঘের কার্যালয়, বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা এবং বাস্তুচ্যুত হওয়া কয়েক লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে সুদানে খাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে, যেখানে প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার শিকার।

এই পরিস্থিতিতে, বন্দরটি বর্তমানে মানবিক সহায়তার প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, প্যারামিলিটারি বাহিনীর হামলা ‘উদ্বেগজনক’, যা বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মানবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আরএসএফ-এর ড্রোন ব্যবহারের কারণে সেনাবাহিনীর সরবরাহ লাইনেও সমস্যা হচ্ছে।

আরএসএফ উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করছে এবং সেনাবাহিনীর অভিযোগ, সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের এই ড্রোন সরবরাহ করছে।

তবে, আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) সম্প্রতি সুদানের করা একটি মামলার রায় বাতিল করে দিয়েছে, যেখানে তারা আরএসএফ-কে সমর্থন করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনেছিল।

প্রসঙ্গত, সুদানে সেনাবাহিনী এবং আরএসএফ-এর মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের কারণে মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *