পর্তুগালে সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সেন্টার-রাইট ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এডি) সবচেয়ে বেশি ভোট পেলেও সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
ফলে দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী লুইজ মন্টেনিগ্রোর নেতৃত্বাধীন এডি জোট সরকার গঠনের জন্য অন্যান্য ছোট দলের সঙ্গে জোট করতে বাধ্য হতে পারে।
তবে সেক্ষেত্রেও সরকার কতদিন টিকবে, তা বলা কঠিন।
কারণ, পর্তুগালের রাজনৈতিক ইতিহাসে এর আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
গত মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী লুইজ মন্টেনিগ্রো আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পরেই এই নির্বাচনের ডাক দেওয়া হয়।
বিরোধীরা তার পরিবারের ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।
যদিও মন্টেনিগ্রো কোনো দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নির্বাচনে প্রধান ইস্যু ছিল আবাসন এবং অভিবাসন।
এইসব বিষয়গুলো ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
এছাড়া, বিগত কয়েক বছর ধরে পর্তুগালে রাজনৈতিক অস্থিরতা লেগেই আছে।
এর আগে, যে কয়েকটি সরকার গঠিত হয়েছে, তাদের মধ্যে একটিও তাদের মেয়াদের পুরো সময় ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত বুথফেরত সমীক্ষায় দেখা গেছে, এডি দল ২৯ থেকে ৩৫.১ শতাংশ ভোট পেতে পারে।
তবে, তাদের পক্ষে এককভাবে সরকার গঠন করা সম্ভব নয়।
এক্ষেত্রে তাদের অন্য কোনো দলের সঙ্গে জোট করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সেন্টার-লেফট সোশ্যালিস্ট পার্টি (পিএস) ১৯.৪ থেকে ২৬ শতাংশ ভোট পেতে পারে।
এছাড়াও, কট্টর-ডানপন্থী চেগা পার্টিও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পেয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নজরে এসেছে।
তাদের ভোট পাওয়ার হার ১৯.৫ থেকে ২৫.৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
পর্তুগালের ২৩০ আসনের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে একটি দলকে ১১৬টি আসন নিশ্চিত করতে হয়।
সেক্ষেত্রে, এডি জোট যদি সরকার গঠন করতে চায়, তবে তাদের হয় কোনো ছোট দলের সঙ্গে জোট বাঁধতে হবে, না হয় সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে।
পর্তুগালের রাজনৈতিক ইতিহাসে গত ৫০ বছর ধরে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট এবং সোশ্যালিস্ট পার্টি- এই দুটি দলেরই প্রধান্য দেখা গেছে।
তবে, জনগণের মধ্যে তাদের সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে, যার ফলস্বরূপ নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থান ঘটছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন পার্লামেন্ট আগের মতোই হতে পারে।
তবে, সরকারের স্থায়িত্ব আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে এডি-র সমঝোতার ওপর নির্ভর করবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা