যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল জুড়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানছে, যার ফলে ভারী বৃষ্টিপাত, তীব্র বাতাস এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। আবহাওয়াবিদরা এই ঝোড়ো হাওয়ার নাম দিয়েছেন ‘নর্থ’ইস্টার’।
এটি উত্তর-পূর্ব দিক থেকে আসা বাতাসের কারণে সৃষ্ট একটি উপকূলীয় ঝড়, যা সমুদ্রের পানিকে উপকূলের দিকে ঠেলে আনে এবং এর ফলে সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এই ঝড়ের প্রভাবে উত্তর ক্যারোলিনা থেকে শুরু করে নিউ ইংল্যান্ড পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
কিছু কিছু স্থানে বাতাসের তীব্রতা আরো বেশি হতে পারে, যা একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের মতোই শক্তিশালী।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, নিউ জার্সির আটলান্টিক সিটি এবং কেপ মে-এর মতো উপকূলীয় শহরগুলোতে পানির উচ্চতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। আটলান্টিক সিটিতে পানির স্তর ২০১২ সালের ‘সুপারস্টর্ম স্যান্ডি’র সময়কার বন্যার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।
এমনকি কেপ মে-তে পানির উচ্চতা অতীতের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারে। এর ফলে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়া, বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করা এবং সমুদ্রের তীর ভাঙনের মতো ঘটনাগুলো ঘটতে পারে।
ঝড়ের কারণে ইতোমধ্যেই কিছু অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। উত্তর ক্যারোলিনারouter banks-এর কিছু অংশে রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সেখানকার সমুদ্রের ঢেউয়ের কারণে বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে গেছে। দক্ষিণ ক্যারোলিনার চার্লসটন হারবারেও বন্যার সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে শহরের বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর তীব্রতা আরো বাড়ছে।
এই নর্থ’ইস্টারের কারণে পূর্ব উপকূলের অনেক এলাকায় এক থেকে তিন ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে, আবার কোথাও কোথাও বৃষ্টির পরিমাণ ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যারও আশঙ্কা রয়েছে।
ঝড়ের কারণে বিমান চলাচলও ব্যাহত হতে পারে। ওয়াশিংটন ডিসি, নিউ ইয়র্ক সিটি এবং বোস্টনের মতো প্রধান শহরগুলোতে বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট বিলম্বিত অথবা বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার নাগাদ ঝড়ের প্রভাব কমে আসতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন