প্রাগের সেন্ট ভিটাস ক্যাথেড্রালে নতুন অর্গান বসানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। ৭০০ বছরের পুরনো, চেক রিপাবলিকের বৃহত্তম এই মন্দিরটিতে এখন থেকে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং কনসার্টের জন্য উপযুক্ত একটি বাদ্যযন্ত্র পাওয়া যাবে।
খবরটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি (AP) পরিবেশন করেছে।
ইউরোপের এই ঐতিহাসিক ক্যাথেড্রালটি শুধু একটি উপাসনালয় নয়, চেক জাতির ইতিহাসের সঙ্গে এর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। চেক রাজাদের রাজ্যাভিষেক এবং সমাধিস্থল হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়েছে।
এমনকি, চেক ক্রাউন জুয়েলস বা রাজকীয় মুকুটও এখানে সংরক্ষিত আছে। চেক প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি ভ্যাভল হাভেলের শেষকৃত্যও এই ক্যাথেড্রালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
নতুন অর্গানটি তৈরি হয়েছে স্পেনের বার্সেলোনার কাছে এল পাপিওলে। বিখ্যাত জার্মান অর্গান নির্মাতা গেহার্ড গ্রেনজিংয়ের তত্ত্বাবধানে এটি তৈরি হয়েছে।
এতে প্রায় ৬ হাজার পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি পাইপের দৈর্ঘ্য ৭ মিলিমিটার থেকে ৭ মিটার পর্যন্ত।
জানা গেছে, আগামী ১৫ই জুন, সেন্ট ভিটাসের উৎসবের দিন এটির প্রথম শব্দ শোনা যাবে।
ক্যাথেড্রালের ভেতরে প্রধান প্রবেশদ্বারের উপরে, তিন তলা উঁচু একটি কাঠামো তৈরি করে আন্তর্জাতিক কর্মীরা এই বাদ্যযন্ত্রের বিভিন্ন অংশ স্থাপন করছেন।
আগামী আগস্ট মাসের শেষ নাগাদ এই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর বছরের শেষ পর্যন্ত পাইপগুলোর সুর এবং অন্যান্য কারিগরি দিকগুলো পরীক্ষা করা হবে।
আগের অর্গানটি ১৯৩০-এর দশকে তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু বিশাল ক্যাথেড্রালের জন্য সেটি যথেষ্ট ছিল না। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং কমিউনিস্ট শাসনের কারণে এটির মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
ফলে বাদ্যযন্ত্রটি প্রায়ই বিকল হয়ে যেত।
নতুন অর্গান তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালে। এর জন্য একটি ক্রাউডফান্ডিং বা গণ-অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হয়।
এই উদ্যোগে ১০৯ মিলিয়ন চেক কোরোনা (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১.২৫ বিলিয়ন টাকা) সংগ্রহ করা হয়েছিল, যা মোট প্রয়োজনীয় অর্থের ৯৮ শতাংশ।
ঐতিহাসিক এই ক্যাথেড্রালে নতুন অর্গান স্থাপন নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এর মাধ্যমে শুধু ধর্মীয় কার্যক্রমই নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও আরও সমৃদ্ধ হবে।
তথ্য সূত্র: এপি (AP)