প্রাগ চিড়িয়াখানায় এক বিরল উদ্যোগে বিপন্নপ্রায় একটি শকুন শাবকের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। সেখানকার পশুশালকরা এখন এক অভিনব কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন – তারা এক ধরণের “পুতুল” ব্যবহার করছেন, যা অনেকটা শকুন পাখির বাচ্চার মায়ের মতো দেখতে।
এই পুতুল ব্যবহার করে তারা বাচ্চা শকুনটিকে খাবার খাওয়াচ্ছেন।
জানা গেছে, কয়েক সপ্তাহ আগে জন্ম নেওয়া হলুদ মাথার শকুন ছানাটিকে তার মা-বাবা প্রত্যাখ্যান করার পরেই এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন চিড়িয়াখানার কর্মীরা। চিড়িয়াখানার কর্মী আন্তোনিন ভাইদলের মতে, সাধারণত শকুন দম্পতি ২০১৮ এবং ২০২৩ সালে তাদের বাচ্চাদের ভালোভাবে দেখাশোনা করলেও এবার তারা রাজি হয়নি।
ডিমের আকারের একটি নকল বস্তু বাসা থেকে সরিয়ে নেওয়ার পরেই বোঝা যায়, সম্ভবত তারা শাবকটিকে আর রাখতে চাইছে না।
ভাইদল জানান, শকুন ছানাটির স্বাভাবিক আচরণ বজায় রাখতে এই পুতুল পদ্ধতি খুবই জরুরি। মানুষের সঙ্গে বেশি মিশে গেলে, সে প্রজনন ক্ষমতা হারাতে পারে।
এই কারণে, পুতুলের মাধ্যমে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুতুলটি দেখতে অবিকল শকুন পাখির মতো না হলেও, বাচ্চাটির মধ্যে কিছু সংকেত কাজ করে। যেমন, এর পালকহীন ঘাড় এবং মাথার হালকা কমলা রংয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয় শকুন ছানাটি।
হলুদ মাথার শকুন (Cathartes burrovianus) মূলত লাতিন আমেরিকা ও মেক্সিকোতে দেখা যায়। প্রাগ চিড়িয়াখানা ইউরোপের তিনটি চিড়িয়াখানার মধ্যে অন্যতম, যেখানে এই প্রজাতির শকুনদের প্রজনন করানো হয়।
এর আগে, এই চিড়িয়াখানা বিপন্নপ্রায় জাভান সবুজ ম্যাগপাই (Cissa theresa) এবং রাইনোসেরাস হর্নবিল পাখির ছানাদের বাঁচাতেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফল হয়েছে। সাধারণত যে সমস্ত পাখি জোড়ায় বাঁচে, তাদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি বেশ কার্যকর।
ভাইদলের আশা, এবারও তারা সফল হবেন। তিনি বলেন, “এই পদ্ধতি ভালো ফল দিচ্ছে। দেখা যাক শকুনদের ক্ষেত্রে কি হয়।”
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস