গর্ভবতী এক নারীর বাথরুমে গোসল করা নিয়ে শাশুড়ির আপত্তি, যা নিয়ে অনলাইন জগতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি, দ্বিতীয় সন্তানের মা হতে চলা একজন নারী, তীব্র কোমর ব্যথার (সায়াটিকা) কারণে আরামের জন্য মাঝে মাঝে গোসল করেন। যখন তিনি বাথরুমে যান, তখন তার দুই বছর বয়সী শিশুটি একা খেলা করে।
কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন ওই নারীর শাশুড়ি। তিনি নাকি তার ছেলের কাছে (ওই নারীর স্বামী) টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়েছেন, পুত্রবধূ ‘সন্তানের প্রতি অমনোযোগী’।
বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে মায়েরা তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করার একটি ফোরামে (Mumsnet) আলোচনা শুরু হয়। ওই নারী সেখানে তার সমস্যার কথা জানান।
তিনি জানান, তার স্বামী একটি ব্যবসা চালান এবং সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাকে বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। দিনের বেলা তিনিই মূলত সন্তানের দেখাশোনা করেন। এছাড়া তিনি কোমর ব্যথায় খুব কষ্ট পান, যার জন্য ফিজিওথেরাপিও চলছে।
ওই নারী আরও জানান, সপ্তাহে এক বা দু’বার যখন ব্যথা অসহ্য হয়ে ওঠে, তখন তিনি দুপুরে বাথরুমে যান। বাথরুমে যাওয়ার আগে তিনি নিশ্চিত করেন, তার মেয়ের একা খেলার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যেমন, ঘরের জানালাগুলো বন্ধ করা হয় এবং রান্নাঘরের আলমারিগুলোতে সেফটি লক লাগানো থাকে। এছাড়া অপ্রয়োজনীয় ঘরগুলোর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে তার মেয়ে হয় সোফায় বসে খেলতে পারে, না হয় খেলনা নিয়ে তার নিজের ঘরে খেলতে পারে।
বাথরুমের ঠিক পাশেই মেয়ের ঘর। গোসলের আগে তিনি টিভিতে জনপ্রিয় কিছু কার্টুন (যেমন: মিস র্যাচেল অথবা পেপ্পা পিগ) চালিয়ে দেন এবং ৩০ মিনিটের জন্য গরম পানিতে গোসল করেন।
একদিন শাশুড়ির সঙ্গে তার এই বাথরুম রুটিন নিয়ে কথা হয়। এর পরেই ঘটে বিপত্তি।
ওই সময় শাশুড়ি কিছু না বললেও, পরে তিনি তার ছেলেকে টেক্সট করেন এবং জানান, পুত্রবধূর এই কাজটি ‘অমনোযোগীতা’ এবং ‘যে কোনো সময় কিছু একটা ঘটতে পারে’।
অন্যদিকে, স্বামীর কথায় জানা যায়, তিনি তার স্ত্রীর হয়ে সাফাই গেয়েছেন। তিনি মাকে জানান, তার স্ত্রী একজন ‘অসাধারণ’ মা এবং তিনি (স্বামী) চান না তার স্ত্রীর সিদ্ধান্তের উপর কেউ প্রশ্ন তুলুক।
যদিও ঘটনার পর ওই নারী বেশ মন খারাপ করে আছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আগে কখনও আমার মাতৃত্ব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, তাই এটা আমাকে হতাশ করেছে। হরমোনের কারণেও হয়তো এমনটা হচ্ছে।’
ফোরামের শেষে তিনি জানতে চান, ‘আমি কি ভুল করছি, নাকি এখানে ভয়ের কিছু নেই?’
আলোচনাটিতে অনেকে ওই নারীর এই কাজটি সমর্থন করেছেন। তাদের মতে, এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ মা তো পাশেই থাকছেন।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, তারা এত অল্প বয়সের শিশুকে একা রেখে এতটা সময় বাথরুমে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন না।
একজন মন্তব্যকারী একটি সম্ভাব্য সমাধান দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি একটি খেলার স্থান (প্লেপেন) কিনে বাথরুমে রাখতে পারতাম। মা হিসেবে আমারও এমন সময় দরকার হতো, যখন আমি একটু বিশ্রাম নিতে চাইতাম অথবা গোসল করতে যেতাম।
এটা তো শাশুড়ির উদ্বেগের বিষয় নয়। বরং তিনি সাহায্য করতে পারতেন, সমালোচনা না করে।’
Bangladeshi পরিবারগুলোতে মা ও শাশুড়ির মধ্যেকার সম্পর্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অনেক সময় দেখা যায়, সন্তানের লালন-পালন বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে শাশুড়িদের মতামত দেওয়ার প্রবণতা থাকে। এই ঘটনায়ও তেমনটাই দেখা যাচ্ছে, যেখানে শাশুড়ি তার পুত্রবধূর সন্তানের প্রতি যত্ন নেওয়ার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল