বিখ্যাত উপন্যাস ‘প্রাইড এন্ড প্রেজুডিস’-এর চলচ্চিত্র রূপান্তর, বিশেষ করে ২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জো রাইট পরিচালিত সিনেমাটি, আজও দর্শক হৃদয়ে গেঁথে আছে। সম্প্রতি সিনেমাটির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে, এটির আকর্ষণীয় দিকগুলো নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
আসুন, দেখে নেওয়া যাক কেন এই চলচ্চিত্রটি আজও এত জনপ্রিয়।
এই সিনেমার প্রধান আকর্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো গল্পের গভীরতা এবং চরিত্রগুলোর চিত্রায়ণ। জেন অস্টিনের মূল উপন্যাসে প্রেম, সামাজিক মর্যাদা, এবং পরিবারের বন্ধন – এই বিষয়গুলো অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
পরিচালক জো রাইট সিনেমার মাধ্যমে সেই বিষয়গুলোকে আরও স্পষ্টভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রথম প্রস্তাবের দৃশ্যে ডার্সি চরিত্রে ম্যাথু ম্যাকফ্যাডেন এবং এলিজাবেথ চরিত্রে কেইরা নাইটলি-এর অভিনয় দর্শকদের মন জয় করেছে।
বৃষ্টির মধ্যে ডার্সি’র আবেগপূর্ণ “আমি তোমাকে ভালোবাসি” বলার দৃশ্যটি অনেকের কাছেই স্মরণীয়।
উপন্যাস এবং অন্যান্য চলচ্চিত্র রূপান্তরের থেকে জো রাইটের সিনেমায় কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যেমন, ডার্সি’র চরিত্রের গভীরতা এখানে আরও বেশি দেখানো হয়েছে।
মূল উপন্যাসে ডার্সি কিছুটা গম্ভীর এবং অন্তর্মুখী ছিলেন, কিন্তু এই সিনেমায় তাকে আরও আবেগপ্রবণ এবং সংবেদনশীল হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এলিজাবেথের প্রতি তার আকর্ষণ, দ্বিধা, এবং ভালোবাসার অনুভূতিগুলো দর্শকদের কাছে আরও স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়।
শুধু ডার্সি নয়, অন্যান্য চরিত্রগুলোকেও জো রাইট নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন। এলিজাবেথের বোন মেরি’র চরিত্রটি এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
একটি দৃশ্যে, যখন এলিজাবেথ, মিঃ কলিন্সের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, তখন মেরির মুখাবয়বে ফুটে ওঠা অভিব্যক্তি বুঝিয়ে দেয়, তিনিও হয়তো এমন একটি প্রস্তাবের অপেক্ষায় ছিলেন।
সিনেমাটি মুক্তির সময় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। প্রায় ২৮ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই সিনেমা বিশ্বজুড়ে ১২১ মিলিয়ন ডলারের বেশি আয় করে।
সমালোচকদের পাশাপাশি সাধারণ দর্শকও সিনেমাটির প্রশংসা করেছেন। সিনেমার চিত্রগ্রহণ, সঙ্গীত এবং অভিনয়শৈলী দর্শককে মুগ্ধ করেছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে, যেখানে সিনেমা হলগুলোতে দর্শক কমে যাচ্ছে এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের চাহিদা বাড়ছে, সেখানে এই ক্লাসিক সিনেমার পুনর্মুক্তি দর্শকদের জন্য নস্টালজিক একটি অনুভূতি নিয়ে আসে।
অনেকে মনে করেন, এই সিনেমাটি সেই সময়ের কথা মনে করায়, যখন মানুষের সম্পর্কগুলো আরও গভীর এবং আন্তরিক ছিল।
সবশেষে বলা যায়, ‘প্রাইড এন্ড প্রেজুডিস’ শুধু একটি প্রেমের গল্প নয়, এটি একটি পারিবারিক গল্পও। মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি, এবং ভালোবাসার গুরুত্ব – এই বিষয়গুলো সিনেমার মাধ্যমে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
যারা ক্লাসিক সিনেমা পছন্দ করেন, তাদের জন্য এই সিনেমাটি একটি দারুণ উপভোগ্য অভিজ্ঞতা হতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন