হ্যারি: বোমা ফাটানোর পর প্রকাশ্যে, ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডে আবেগঘন বার্তা!

প্রিন্স হ্যারির নতুন পদক্ষেপ: ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের সমর্থনে

যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হলো একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি, তাঁর প্রয়াত মা, প্রিন্সেস ডায়ানার স্মৃতিতে প্রতিষ্ঠিত ‘ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড’-এর সমর্থনে উপস্থিত ছিলেন। এটি ছিল হ্যারির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, কারণ যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা বিষয়ক আপিল খারিজ হওয়ার পর এই প্রথম তিনি প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন।

অনুষ্ঠানটি ছিল ‘সার্ভিসনাউ নলেজ ২০২৫’ কনফারেন্সের অংশ। এখানে হ্যারি ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. টেসি ওজোর সঙ্গে যোগ দেন। এই সম্মেলনে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্ব বিকাশের জন্য ‘ইনভেস্ট’ নামক একটি প্রচার অভিযানের সূচনা করা হয়। এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে তরুণ নেতৃত্বের উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করা।

অনুষ্ঠানে হ্যারি মিশিগানের সিকান্দার ‘সনি’ খান এবং জ্যামাইকার ক্রিস্টিনা উইলিয়ামস-এর সঙ্গে যুব নেতৃত্ব বিষয়ক একটি আলোচনায় অংশ নেন। এই দুজনেই ‘ডায়ানা লিগ্যাসি অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ী। আলোচনায় কর্মক্ষেত্রে তরুণদের জন্য সুযোগ তৈরি এবং তাদের উন্নতির পথ সুগম করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

প্রিন্স হ্যারি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে আমি এমন তরুণদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি, যারা প্রতিকূলতাকে জয় করে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা শুধু অনুপ্রেরণামূলক নয়, এটি এক বিশাল সম্ভাবনা, যা আমাদের উপেক্ষা করা উচিত নয়। অনেক তরুণ নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, কারণ আমরা তাদের জন্য উপযুক্ত পথ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এই প্রজন্মের তরুণরা নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কারও অনুমতির অপেক্ষা করছে না, বরং তারা ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে মানসিক বুদ্ধিমত্তা, সামাজিক সচেতনতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি খোলাখুলি আলোচনা করার মতো গুণ, যা আগের প্রজন্মের মধ্যে দেখা যেত না। তাদের সাহসিকতাই তাদের আলাদা করে তোলে, তারা কোনো আপোসে রাজি নয়।’

ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রিন্সেস ডায়ানার এই বিশ্বাস ছিল যে তরুণদের বিশ্ব পরিবর্তনের ক্ষমতা আছে। এই অ্যাওয়ার্ড বর্তমানে প্রিন্স হ্যারি এবং প্রিন্স উইলিয়াম উভয়ের কাছেই সমর্থন লাভ করে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে হ্যারি রাজকীয় দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।

৬ই মে তারিখটি রাজ পরিবারের জন্য আরও একটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিন ছিল। কারণ এই দিনেই প্রিন্স আর্চির ষষ্ঠ জন্মদিন ছিল। একই সঙ্গে ছিল রাজা তৃতীয় চার্লসের সিংহাসন আরোহণের দ্বিতীয় বার্ষিকী।

প্রিন্স হ্যারির যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা বিষয়ক আইনি লড়াই এখনো অব্যাহত রয়েছে। হ্যারির আইনজীবীরা বলছেন, এটি তাঁর জীবনের জন্য একটি লড়াই। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে হ্যারি জানান, তিনি তাঁর স্ত্রী এবং সন্তানদের নিয়ে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারছেন না, কারণ সেখানে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তিনি তাঁর সন্তানদের নিজের জন্মভূমি দেখাতে না পারার বিষয়টি অনুভব করেন।

যুক্তরাজ্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রিন্স হ্যারি এবং রাজা তৃতীয় চার্লসের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলে জানা যায়। হ্যারির আইনি দল মনে করে, যুক্তরাজ্যের আদালত তাঁর ও তাঁর পরিবারের ঝুঁকির বিষয়টি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *