পণ্যের পরীক্ষা: ব্যবহারের পর কীভাবে অভাবীদের সাহায্য করছে একটি সংস্থা
নতুন কোনো পণ্য বাজারে আসার আগে সেগুলোর মান যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। আর এই পরীক্ষার পর অনেক সময় পণ্যগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় থেকে যায়।
সম্প্রতি, একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা তাদের পরীক্ষিত পণ্যগুলো পুনর্ব্যবহার করার এক অভিনব উপায় খুঁজে বের করেছে। তারা শুধু পণ্যের পরীক্ষা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং পরীক্ষা শেষে সেগুলো বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় দান করে অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।
সংস্থাটি তাদের পরীক্ষাগারে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পরীক্ষা চালায়। এর মধ্যে রয়েছে— ম্যাট্রেস থেকে শুরু করে ট্রেডমিল, এয়ার ফ্রায়ার, ব্লেন্ডার এবং ইলেকট্রিক টুথব্রাশের মতো জিনিসপত্র। পরীক্ষার পর এই পণ্যগুলো হয় গুদামজাত করা হতো, না হয় ফেলে দেওয়া হতো।
কিন্তু এবার তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই পণ্যগুলো ফেলে না দিয়ে সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানো হবে।
সংস্থাটির এক কর্মী, যিনি মূলত এই পুনর্ব্যবহার কার্যক্রমের দায়িত্বে ছিলেন, জানান—তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল পণ্যগুলো সঠিক স্থানে পৌঁছে দেওয়া। অনেক সময় কুরিয়ার সার্ভিসের জটিলতা এবং বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে কাজটি কঠিন হয়ে পড়ে।
উদাহরণস্বরূপ, একবার ইলেকট্রিক টুথব্রাশগুলো একটি দাতব্য সংস্থায় পাঠাতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। প্রথমে কুরিয়ার কোম্পানিগুলোর অসহযোগিতা, পরে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব—এসব কারণে কাজটি সম্পন্ন করতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করতে হয়েছে।
তবে সব বাধা পেরিয়ে যখন জিনিসগুলো সুবিধাভোগীদের হাতে পৌঁছেছে, তখন তাদের হাসি ছিল অমূল্য। দাতব্য সংস্থার কর্মীরা জানিয়েছেন, এই টুথব্রাশগুলো তাদের সুবিধাভোগী এবং তাদের পরিবারের স্বাস্থ্যবিধি এবং বাজেট ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে।
শুধু ইলেকট্রনিক পণ্য নয়, খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে পোশাক—সবকিছুই তারা দান করে থাকে।
একবার, খাদ্য বিষয়ক একটি পরীক্ষার পর অবশিষ্ট খাবারগুলো স্থানীয় একটি খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রে দান করা হয়। এছাড়া, যারা বিভিন্ন খেলাধুলায় জড়িত, তাদের জন্য ব্যবহৃত বুটগুলো পরিষ্কার করে একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
এই কার্যক্রমের মাধ্যমে সংস্থাটি একদিকে যেমন বর্জ্য হ্রাস করছে, তেমনি সমাজের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এটি নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এটি আমাদের সমাজে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহানুভূতির গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
আমাদের সকলেরই উচিত, এই ধরনের মানবিক কাজে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী অংশগ্রহণ করা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান