ছোট্ট ভ্রমণে জীবন বদলে যায়! প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যান আর দেখুন…

শহরের কোলাহল থেকে দূরে, প্রকৃতির মাঝে: ‘ক্ষুদ্র অভিযান’-এর মাধ্যমে জীবন পরিবর্তনের গল্প।

বর্তমান যুগে, ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে প্রকৃতির সান্নিধ্য থেকে যেন আমরা দূরে চলে যাচ্ছি। কংক্রিটের এই শহরে কর্মব্যস্ততার মাঝে মানসিক শান্তির জন্য একটু অবসর খুঁজে পাওয়া কঠিন।

তবে, সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের চলচ্চিত্র নির্মাতা ও পরিবেশ বিষয়ক কর্মী জ্যাক হ্যারিস প্রকৃতির কাছাকাছি গিয়ে জীবনকে নতুনভাবে খুঁজে পেয়েছেন। লন্ডনের জীবন ছেড়ে তিনি কর্নওয়ালে এসে প্রকৃতির মাঝে “ক্ষুদ্র অভিযান” শুরু করেন।

তাঁর এই অভিজ্ঞতা শুধু তাঁর জীবনকেই পরিবর্তন করেনি, বরং প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে।

জ্যাক হ্যারিসের মতে, প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়া আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। প্রকৃতির বিশালতা আমাদের উদ্বেগকে কমিয়ে দেয় এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।

কর্নওয়ালের সবুজ-শ্যামল পরিবেশে, বিশেষ করে সেখানকার রেইনফরেস্টের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তাকে মুগ্ধ করে। সেখানে সবুজ ঘাস, পাথুরে ভূমি, ঝর্ণা – যেন এক রূপকথার জগৎ।

প্রকৃতির এই রূপ তাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে।

শহরে বসবাস করার সময়, জ্যাক হ্যারিসের “ক্ষুদ্র অভিযান” বলতে দূরে, যেমন – অ্যামাজন অথবা হিমালয়ের মতো স্থানে ভ্রমণকে বোঝাতো। কিন্তু কর্নওয়ালে আসার পর তিনি উপলব্ধি করেন, প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে এত দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

আমাদের চারপাশেও অনেক সুন্দর স্থান রয়েছে, যা আমাদের মনকে শান্ত করতে পারে।

জ্যাক হ্যারিস এখন একটি পুরনো জলকলের কাছাকাছি বসবাস করেন। তিনি তাঁর বাড়ির আশেপাশে সবজি ও ফল গাছ লাগিয়েছেন।

তিনি প্রকৃতির থেকে শিক্ষা নিয়ে কিভাবে পরিবেশকে আরও ভালো রাখা যায় সে বিষয়ে কাজ করছেন। তাঁর এই জীবনযাত্রা প্রমাণ করে, প্রকৃতির সঙ্গে মিশে থাকা আমাদের সুস্থ জীবনের জন্য কতটা জরুরি।

জ্যাক হ্যারিসের মতে, প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো আমাদের সৃজনশীলতাকে বাড়ায়। তিনি বলেন, আগে তিনি মনে করতেন, কম্পিউটারের সামনে না কাটানো সময়টা আসলে অকারণ।

কিন্তু এখন তিনি বাইরে কাজ করেন, গাছ লাগান, এবং কাঠমিস্ত্রীর কাজ করেন। এতে তিনি অনেক বেশি আনন্দ পান এবং কাজের প্রতি মনোযোগও বাড়ে।

এমনকি, তিনি এডিএইচডি (অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারএকটিভিটি ডিসঅর্ডার)-তে আক্রান্ত হওয়ার পরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে এসে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন। প্রকৃতির মাঝে সময় কাটানো তাঁকে সেই চঞ্চলতাকেও উপভোগ করতে শিখিয়েছে।

আপনিও কি শহরের এই যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি পেতে চান? তাহলে প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করুন।

একটি দিনের জন্য হলেও, প্রকৃতির নীরবতা আপনাকে নতুন করে বাঁচতে শেখাবে। প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়া, আমাদের মনকে শান্ত করে এবং নতুন করে বাঁচতে অনুপ্রাণিত করে।

প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়া মানে শুধু ভ্রমণ করা নয়, বরং নিজের ভেতরের জগৎটাকে নতুন করে আবিষ্কার করা।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *