জ্যোতিষশাস্ত্র বলছে: আপনার প্রজন্ম কেমন? এখনই জানুন!

বাংলার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর নক্ষত্রের প্রভাব: প্রজন্ম বিভাজন ও জ্যোতিষ শাস্ত্রের ধারণা

জ্যোতিষশাস্ত্রের ধারণা অনুযায়ী, প্রতিটি প্রজন্মের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এই বৈশিষ্ট্যগুলি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে গ্রহ-নক্ষত্রের গতিবিধি।

এই নিবন্ধে আমরা দেখব, কীভাবে ইউরেনাস, নেপচুন এবং প্লুটোর মতো গ্রহগুলি প্রজন্মের বৈশিষ্ট্য তৈরি করে এবং সেই অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষের জীবনযাত্রা ও চিন্তাভাবনার ধরন কেমন হয়।

জ্যোতিষশাস্ত্রে, ইউরেনাস গ্রহটি বিদ্রোহ, নেপচুন স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা এবং প্লুটো পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়।

এই গ্রহগুলির রাশি পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষের উপর ভিন্ন প্রভাব পড়ে। এই গ্রহগুলি একটি রাশিতে বেশ কয়েক বছর অবস্থান করে, যা একটি প্রজন্মের মানুষের মানসিকতা ও জীবনযাত্রার উপর গভীর প্রভাব ফেলে।

উদাহরণস্বরূপ, “সাইলেন্ট জেনারেশন” (১৯২৮-১৯৪৫)-এর সময় ইউরেনাস মেষ থেকে মিথুন রাশিতে প্রবেশ করে।

এই প্রজন্মের মানুষেরা পরিবর্তনের প্রতি ধীরে ধীরে সাড়া দিত। খাদ্য ও অর্থের অভাব তাদের মধ্যে নতুন চিন্তাভাবনার জন্ম দেয়, যা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

নেপচুন কন্যা রাশিতে থাকার কারণে তারা আদর্শবাদী হলেও, বাস্তবতাকে মেনে নিতে শিখেছিল। প্লুটো ক্যান্সারে থাকাকালীন পরিবার তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যা যুদ্ধের সময় কর্মজীবী মায়েদের ধারণা তৈরি করে।

পরবর্তীতে প্লুটো সিংহ রাশিতে প্রবেশ করলে, তারা জীবনের আনন্দ খুঁজে বের করতে চেষ্টা করে।

“বেবি বুমার” প্রজন্ম (১৯৪৬-১৯৬৪)-এর সময় ইউরেনাস মিথুন থেকে কন্যা রাশিতে প্রবেশ করে, যা তাদের প্রতিবাদ ও পরিবর্তনের মানসিকতা তৈরি করে।

নেপচুনের রাশি পরিবর্তনের ফলে এই সময়ে সম্পর্ক এবং যৌনতার ধারণাগুলোও পরিবর্তিত হয়।

“ভালোবাসার সন্তান” এবং “মুক্ত প্রেম”-এর মতো ধারণাগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে।

প্লুটো সিংহ ও কন্যা রাশিতে থাকার কারণে এই প্রজন্মের মধ্যে আত্ম-সচেতনতা বাড়ে। ১৯৮০-এর দশকে “ইয়াপ্পি” সংস্কৃতির জন্ম হয়, এবং তারা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য থেরাপির দিকে ঝুঁকেছিল।

“জেনারেশন এক্স” (১৯৬৫- ১৯৭৯)-এর সময় ইউরেনাস কন্যা থেকে বৃশ্চিক রাশিতে প্রবেশ করে।

এই প্রজন্মের মানুষেরা নিজেদের পরিচয় তৈরি করতে শিখেছিল।

নেপচুনের ধনু রাশিতে প্রবেশের ফলে তারা ভ্রমণ ও আধ্যাত্মিকতার দিকে আকৃষ্ট হয়। এই সময় “এআইডিএস”-এর প্রাদুর্ভাব তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ায়।

প্লুটো তুলা রাশিতে থাকার কারণে বিবাহবিচ্ছেদ সমাজে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে এবং “ল্যাচ-কীড” ধারণাটি জন্ম নেয়।

“মিিলেনিয়ালস” বা “জেনারেশন ওয়াই” (১৯৮০-১৯৯৫)-এর সময় ইউরেনাস বৃশ্চিক থেকে ধনু রাশিতে যায়।

তারা প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ব্যবসার নতুন ধারণা সম্পর্কে অবগত হয়।

নেপচুন ধনু থেকে মকর রাশিতে প্রবেশ করার ফলে তারা অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের ব্যবসা তৈরি করতে শুরু করে।

প্লুটো তুলা, বৃশ্চিক ও ধনু রাশিতে থাকায় সেল ফোন, ইমেইল এবং টেক্সট মেসেজের মতো প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা সারা বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত হয়।

“জেনারেশন জেড” বা “জুমার্স” (১৯৯৬-২০০৯)-এর সময় ইউরেনাস মকর, কুম্ভ ও মীন রাশিতে প্রবেশ করে।

এই প্রজন্মের মধ্যে জ্যোতিষশাস্ত্র এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতি আগ্রহ বাড়ে।

নেপচুন কুম্ভ ও মীন রাশিতে থাকার কারণে তারা উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার সঙ্গে পরিচিত হয় এবং অন্যের প্রতি সাহায্য করার মানসিকতা তৈরি হয়।

প্লুটো ধনু ও মকর রাশিতে থাকার কারণে ব্যবসার নতুন পদ্ধতি তৈরি হয়।

“জেনারেশন আলফা” (২০১০-২০২৪)-এর সময় ইউরেনাস মেষ থেকে বৃষ রাশিতে প্রবেশ করে, যা তাদের জলবায়ু পরিবর্তন এবং আর্থিক বিষয়ে নতুন ধারণা দেয়।

নেপচুন মীন রাশিতে থাকার কারণে তারা নিজেদের ভেতরের জাদুকে অনুভব করে এবং একটি আদর্শের জন্য লড়াই করতে শিখে।

প্লুটো মকর রাশিতে আসার ফলে ব্যবসার ক্ষেত্রে দুর্নীতি হ্রাস পায় এবং কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে তারা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

পরিশেষে, “জেনারেশন বিটা” (২০২৫-২০৩৯)-এর সময় ইউরেনাস বৃষ থেকে কর্কট রাশিতে প্রবেশ করবে, যা তাদের ঐতিহ্যপূর্ণ জীবনযাত্রার দিকে আকৃষ্ট করবে।

নেপচুন মীন থেকে বৃষ রাশিতে যাওয়ার ফলে তারা শিল্পকলার প্রতি আগ্রহী হবে এবং নিজেদের আকাঙ্ক্ষাগুলোকে প্রকাশ করবে।

প্লুটো কুম্ভ রাশিতে থাকার কারণে এই প্রজন্মের জীবনে প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ যাত্রা এবং সমাজের প্রতি গুরুত্ব বাড়বে।

জ্যোতিষশাস্ত্র একটি জটিল বিষয়, এবং বিভিন্ন প্রজন্মের উপর গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব নিয়ে ভিন্ন মত থাকতে পারে।

তবে, এটি মানুষের জীবন ও সমাজের গতিপ্রকৃতি বোঝার একটি উপায় হতে পারে।

তথ্য সূত্র: পিপলস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *