প্রতিবাদে বদলায় বিশ্ব: ট্রাম্প বিরোধী আন্দোলনে রবেকা সলনিট

শিরোনাম: প্রতিবাদের ভাষা: ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ঢেউ এবং পরিবর্তনের পথ

রাজনৈতিক প্রতিবাদের ঢেউ কিভাবে সমাজের উপর গভীর প্রভাব ফেলে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন খ্যাতিমান লেখিকা রেবেকা সলনিট। তার মতে, প্রতিবাদ সবসময়ই তাৎক্ষণিক ফল দেয় না, তবে এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে।

আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতির বিরুদ্ধে ওঠা বিক্ষোভগুলোও এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

সলনিটের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, প্রতিবাদ আন্দোলনের মূল্যায়নে প্রায়ই ভুল হয়, কারণ এর ফলগুলো সবসময় সরাসরি দৃশ্যমান হয় না। উদাহরণস্বরূপ, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ‘গ্রিন নিউ ডিল’-এর কথা বলা যায়।

সরাসরি আইন হিসেবে এটি পাস না হলেও, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনীতির সম্পর্ক নতুনভাবে বুঝতে শিখিয়েছে। এছাড়া, নারীবাদী আন্দোলনের ফলে ধর্ষণ থেকে বেঁচে যাওয়া নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে।

প্রতিবাদ, জনমত তৈরি করে এবং সমাজের প্রচলিত ধ্যানধারণা পরিবর্তনে সহায়তা করে।

সলনিট বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন, কীভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে ক্ষমতা তৈরি করে। আমেরিকার রিপাবলিকান দল তৃণমূল স্তর থেকে ক্ষমতা তৈরি করতে কাজ করেছে, যেখানে ডেমোক্র্যাটরা অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদী কৌশল গ্রহণে পিছিয়ে থাকে।

প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ আন্দোলনের গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে সলনিট বলেন, সমাজের পরিবর্তনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা-ভাবনা ও কৌশল প্রয়োজন। কোনো একটি ঘটনার ফলাফল হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায় না, কিন্তু এর প্রভাব ধীরে ধীরে সমাজের গভীরে প্রবেশ করে।

গণমাধ্যম প্রায়ই প্রতিবাদের খবরকে গুরুত্ব দেয় না, যা আন্দোলনের প্রকৃত চিত্র বুঝতে সমস্যা তৈরি করে। বিক্ষোভের খবরগুলো অনেক সময় এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেন এর কোনো প্রভাব নেই।

কিন্তু এই ধরনের প্রতিবাদগুলো সমাজের উপর গভীর প্রভাব ফেলে, যা হয়তো সরাসরি দৃশ্যমান হয় না।

সলনিট তার লেখায় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন— পরিবর্তনের প্রক্রিয়া সবসময় সরলরৈখিক হয় না। অনেক সময়, পরিবর্তনের সূচনা হয় প্রান্ত থেকে, যা ধীরে ধীরে কেন্দ্রে পৌঁছে যায়।

তিনি মনে করেন, ইতিহাসের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায়, সমাজের পরিবর্তনগুলো একটি জটিল প্রক্রিয়া, যেখানে অনেক অপ্রত্যাশিত বিষয় জড়িত থাকে।

পরিশেষে, সলনিট এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন যে, পরিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, দৃঢ়তা এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষের অংশগ্রহণ।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *