ফুটবল বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ-এর সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি)। নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ফরাসি ক্লাবটির দাপুটে পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে ফুটবলপ্রেমীদের।
ম্যাচের শুরু থেকেই পিএসজি’র আক্রমণ ছিল সুস্পষ্ট। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফাবিয়ান রুইজ-এর জোড়া গোল এবং ওসমান ডেম্বেলের একটি গোলে প্রথমার্ধেই পিএসজি ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়। দ্বিতীয়ার্ধে গনসালো রামোসের গোলে স্কোর ৪-০ হয়, যা পিএসজি’র জয় নিশ্চিত করে।
প্রচণ্ড গরমের মধ্যে খেলাটি অনুষ্ঠিত হলেও পিএসজি’র খেলোয়াড়রা তাদের সেরাটা উজাড় করে দেয়।
এই জয়ের ফলে, পিএসজি’র সামনে এখন ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জেতার সুযোগ এসেছে। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ হতে যাচ্ছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি, যারা সেমিফাইনালে ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্সকে পরাজিত করেছে।
ম্যাচ শেষে পিএসজি’র ম্যানেজার লুইস এনরিকে এই জয়কে দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “এটা আমাদের, প্যারিসের মানুষের জন্য, সমর্থকদের জন্য এবং পুরো ক্লাবের জন্য খুবই বিশেষ একটি মুহূর্ত। আমরা সত্যিই ভালো খেলেছি এবং একটি দারুণ ম্যাচ উপহার দিয়েছি।
আমরা ফাইনালে উঠতে পেরে খুশি। আমাদের সামনে এখন বিশ্বকাপ জেতার সুযোগ রয়েছে।”
অন্যদিকে, এই ম্যাচটি ছিল রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি লুকা মড্রিচের ক্লাবটির হয়ে শেষ ম্যাচ। ক্রোয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডার রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৫৯৭টি ম্যাচ খেলেছেন এবং দলের হয়ে ২৮টি শিরোপা জিতেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ৬টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব।
মড্রিচ ২০১৮ সালে ব্যালন ডি’অরও জিতেছিলেন। এই ম্যাচ শেষে তিনি ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানে যোগ দেবেন।
রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জাবি আলোনসো মড্রিচের বিদায় প্রসঙ্গে বলেন, “আজকের এই ফলাফল হতাশাজনক হলেও, লুকা মড্রিচকে মানুষ সবসময় স্মরণ করবে তার অসাধারণ খেলার জন্য। তিনি বিশ্ব ফুটবলের এবং রিয়াল মাদ্রিদের একজন কিংবদন্তি।”
পিএসজি’র মিডফিল্ডার সেনি মায়ুলু ফাইনাল খেলার সুযোগ পাওয়া নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “আমরা একটি বড় জয় নিয়ে ফাইনালে উঠেছি। আমরা এটা উপভোগ করতে চাই, তবে একই সাথে বিশ্রাম নিয়ে ফাইনালের জন্য প্রস্তুত হতে চাই।”
এই জয়ে পিএসজি প্রমাণ করেছে যে তারা শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ী দল নয়, বরং বিশ্ব ক্লাব ফুটবলের অন্যতম শক্তিশালী দল। তাদের আক্রমণভাগ এবং রক্ষণভাগের সমন্বিত পারফরম্যান্স তাদের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন