ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের এক অসাধারণ গল্প, যা একটি গানের মাধ্যমে নতুন মোড় নিয়েছিল। ঘটনাটি ১৯৯৫ সালের, যখন লিস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক তরুণীর জীবনে ঘটে যাওয়া এক বিশেষ মুহূর্তের সাক্ষী ছিল জনপ্রিয় ব্যান্ড পাল্পের একটি গান।
মেয়েটির নাম ছিল, ধরা যাক, রিয়া। আর তার সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিল একটি ছেলে, যার নাম ছিল নিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বারে প্রথমবার যখন তাদের মধ্যে চুম্বন হয়, তখন রিয়ার মনে হয়েছিল, তারা যেন একটা ভুল করে ফেলেছে। নিল ছিল কিছুটা অন্য ধরনের, সবসময় গাঢ় রঙের পোশাক পরত, যা রিয়ার ভালো লাগত।
তবে তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক নিয়ে সে কখনোই সেভাবে ভাবেনি। বন্ধুত্বের বাইরে অন্য কিছু কল্পনা করার সাহস ছিল না তার।
দিনের পর দিন তারা একসাথে ক্লাস করত, দেখা হত, কিন্তু সেই প্রথম চুম্বনের পর রিয়ার মধ্যে কেমন যেন একটা অস্বস্তি তৈরি হল। সে নিলকে এড়িয়ে চলতে শুরু করল, কারণ সে ভয় পাচ্ছিল, যদি তাদের বন্ধুত্ব ভেঙে যায়!
রিয়া সবসময় সবকিছু নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করত, কিন্তু নিল ছিল একদমই অন্যরকম, সহজ এবং স্বাভাবিক। সম্ভবত নিল তাদের সম্পর্ককে অন্য দিকে নিয়ে যেতে রাজি ছিল, কিন্তু রিয়ার দ্বিধা ছিল।
এরকম দ্বিধা আর সংকোচের মধ্যে কাটছিল তাদের দিন। এর মধ্যে একদিন সকালে, রিয়া রেডিওতে একটি গান শুনছিল। গানটি ছিল পাল্প ব্যান্ডের “সামথিং চেঞ্জড”।
গানটি ছিল একজন মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত নিয়ে, যেখানে তার প্রেম হয়। গানটি শোনার পর রিয়ার মনে হল, যেন তার ভেতরের সব দ্বিধা, ভয় নিমেষেই দূর হয়ে গেছে।
তার মনে হল, নিলই তার ভালোবাসার মানুষ।
গানটি যেন রিয়াকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছিল। এর পরেই সে সিদ্ধান্ত নেয়, নিলকে তার অনুভূতির কথা জানাবে।
ক্লাস শেষে সে সরাসরি নিলের কাছে যায় এবং পাল্পের গানটি শোনার পর তার অনুভূতির কথা জানায়। প্রথমে নিল একটু অবাক হয়েছিল, কিন্তু পরে সে স্বাভাবিক হয়।
আজ, প্রায় ৩০ বছর পর, রিয়া আর নিল একসাথে আছে। “সামথিং চেঞ্জড” তাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তারা তাদের বিবাহবার্ষিকীতে সবসময় গানটি শোনে। রিয়া প্রায়ই ভাবে, যদি সেই গানটি সেদিন তার জীবনে না আসত, তবে হয়তো তাদের পথ আলাদা হত।
হয়তো সে অন্য কারো সাথে গানটি গাইত।
এই গল্পটি ভালোবাসার গভীরতা আর একটি গানের অসামান্য প্রভাবের প্রমাণ। এটি বুঝিয়ে দেয়, কিভাবে কখনো কখনো একটি গান আমাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, সাহস যোগায় ভালোবাসার পথে এগিয়ে যেতে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান