রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত কিছু শর্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় এই বিষয়ে আলোচনা শুরু হলেও, পুতিনের শর্তগুলো অনেক কঠিন হওয়ায় তা বাস্তবায়িত হওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
আলোচনার শুরুতে ট্রাম্প প্রস্তাব দেন, উভয়পক্ষ যেন স্থল, জল ও আকাশ পথে ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। যদিও ইউক্রেন এই প্রস্তাবে রাজি ছিল, কিন্তু পুতিনের পক্ষ থেকে এমন কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে যা শান্তি চুক্তির পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংঘাত নিরসনের মূল শর্ত হলো কিয়েভকে সব ধরনের সামরিক সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ বন্ধ করতে হবে।
এর অর্থ হলো, কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ ইউক্রেনের সকল মিত্র দেশগুলোকেও সামরিক সাহায্য বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও, কিয়েভকে দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা দিতে ‘পুনরুদ্ধার বাহিনী’ গঠনের পরিকল্পনা থেকেও সরে আসতে হবে, যার মাধ্যমে ইউক্রেনের বন্দর ও বিমানবন্দরগুলো নিরাপদ রাখা এবং দেশটির প্রয়োজনীয় সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা ছিল।
ইউক্রেনের জন্য এমন শর্ত মেনে নেওয়া কঠিন। বিগত তিন বছর ধরে রাশিয়াকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে ইউক্রেনকে অনেক ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করতে হয়েছে। দেশটির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা বর্তমানে রাশিয়ার দখলে।
বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের এই শর্তগুলো অনেকটা ইচ্ছাপূরণের মতো শোনাচ্ছে। তাদের ধারণা, রাশিয়া চাইছে আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে ইউরোপ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে।
তবে, ট্রাম্প পুতিনের কাছ থেকে একটি বিষয়ে রাজি করাতে পেরেছেন। সেটি হলো, ইউক্রেন যদি রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা বন্ধ করে, তাহলে রাশিয়াও ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে বোমা হামলা চালানো বন্ধ করবে।
আলোচনা এখনো চলছে, তবে এর ফল কী হবে তা বলা কঠিন। ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে খেলাধুলার সম্পর্ক বাড়ানোরও একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। জানা গেছে, দুই দেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে আইস হকি ম্যাচ আয়োজন করা হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান