পুতিনের কুর্স্ক সফর: যুদ্ধের আগুনে নতুন মোড়?

যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্ত সংলগ্ন কুর্স্ক অঞ্চল সফর করেছেন। রুশ প্রেসিডেন্টের এই সফর এমন এক সময়ে হলো, যখন উভয়পক্ষের মধ্যে সামরিক তৎপরতা বাড়ছে এবং শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা এখনো পর্যন্ত ক্ষীণ।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, গত মাসে ইউক্রেনীয় সেনাদের হটিয়ে দেওয়ার পর এই প্রথম পুতিন কুর্স্কে গেলেন।

গত বছরের আগস্ট মাসে ইউক্রেনীয় সেনারা কুর্স্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়েছিল, যা যুদ্ধের ময়দানে তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো বিদেশি শক্তি রাশিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে।

যদিও এরপর রাশিয়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুতিনের কুর্স্ক সফরের সময় তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

রুশ টেলিভিশনে স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। এই সফরে পুতিনের সঙ্গে ছিলেন ক্রেমলিনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সের্গেই কিরিয়েনকো।

অন্যদিকে, ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ছয় সেনা নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং সামরিক ইউনিটের কমান্ডারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের সুমি সীমান্তে রাশিয়ার আক্রমণ বেড়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।

তাদের দাবি, হামলায় বিশেষ বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে। রাশিয়া এই হামলার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে একটি ভবনে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

সামরিক সংঘাতের পাশাপাশি ড্রোন হামলার ঘটনাও বাড়ছে। রাশিয়া জানিয়েছে, গত ১২ ঘণ্টায় তারা ইউক্রেনের ছোড়া ১৫৯টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে।

মূলত ইউক্রেন সীমান্ত সংলগ্ন রুশ অঞ্চলগুলোতে এসব ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল। এর বাইরে, ইউক্রেনও রাশিয়ার ওরিওল অঞ্চলের একটি সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন কেন্দ্রে ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তাদের ছোড়া ১০টি ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে, যার ফলে সেখানে আগুন লেগে যায়।

এই কেন্দ্রটি ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কারখানায় সরঞ্জাম সরবরাহ করে।

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে এখনো পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি ফোনালাপ হয়, তবে তাতেও কোনো সমাধানে আসা যায়নি।

ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য চাপ দিচ্ছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার বিরুদ্ধে আলোচনা বিলম্বিত করার অভিযোগ করেছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *