রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তের কাছে অবস্থিত কুর্স্ক অঞ্চলে সফর করেছেন। রুশ সামরিক বাহিনী এলাকাটি থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিতাড়িত করার দাবি জানানোর পর এই প্রথম তিনি সেখানে গেলেন।
ক্রেমলিন বুধবার এই খবর জানায়। গত আগস্ট মাসে ইউক্রেনীয় বাহিনী কুর্স্ক অঞ্চলে প্রবেশ করে, যা ছিল যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার ভূখণ্ডে তাদের অন্যতম বড় সাফল্য।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম কোনো বিদেশি শক্তি রাশিয়ার ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। এটি ছিল ক্রেমলিনের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
যদিও রাশিয়া দাবি করেছে যে তারা এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিতাড়িত করেছে, কিন্তু কিয়েভ এই দাবি অস্বীকার করেছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ বুধবার জানিয়েছে, তাদের সেনারা কুর্স্কে রাশিয়ার ১৩টি হামলা প্রতিহত করেছে।
পুতিনের এই সফরকে বিশ্লেষকরা দেখছেন এমন একটি পদক্ষেপ হিসেবে, যা রাশিয়া যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে, সেই বার্তা দিতে চাইছে।
কারণ ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান প্রত্যাশার চেয়ে অনেক ধীর গতিতে চলছে এবং এতে ব্যাপক হতাহত ও সরঞ্জামের ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও পুতিন তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
পুতিনের কুর্স্ক সফরের সময় তিনি কুর্স্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র-২ পরিদর্শন করেন এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবকদের পোশাকে রাশিয়ার পতাকা এবং ‘Z’ ও ‘V’ চিহ্ন ছিল, যা ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের প্রতীক।
পুতিন কুর্স্কের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেকজান্ডার খিনশাইনের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য মাসিক ভাতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে কথা বলেন।
এছাড়াও, তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের বীরত্বগাথা তুলে ধরতে একটি জাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাব সমর্থন করেন।
অন্যদিকে, ইউক্রেনেও রাশিয়ার ড্রোন হামলা অব্যাহত রয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা গত রাতে ১৫৯টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে ৫৩টি ওরিওল অঞ্চলে এবং ৫১টি ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার ড্রোন হামলায় সুমি অঞ্চলে দুজন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছে।
কিয়েভ অঞ্চলে একটি ড্রোন ধ্বংসাবশেষ আঘাত হানায় এক পরিবারের চার সদস্য আহত হয়েছে। ইউক্রেনীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া ৭৬টি শাহেদ এবং ডেকোয়ি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস