ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের প্রস্তাব দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এই প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গেই এর তীব্র বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বক্তব্যে পুতিন জানান, ইউক্রেনে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে, যা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন আয়োজন করবে। এর মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জনকারী একটি সরকার ক্ষমতায় আসবে এবং তাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব হবে।
পুতিনের এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন মুখপাত্র জানান, ইউক্রেনের সরকার কেমন হবে, তা দেশটির সংবিধান অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মেয়াদ গত মে মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে, ইউক্রেন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে দেশটির খনিজ সম্পদ উত্তোলনের বিষয়টি জড়িত। প্রস্তাব অনুযায়ী, একটি যৌথ বিনিয়োগ তহবিল গঠন করা হবে এবং সেই তহবিল থেকে প্রথমে ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তা এবং তার সুদ পরিশোধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে সম্পদ কেনার সুযোগ দেওয়া হবে।
এরপরই কেবল ইউক্রেন এই তহবিলের লাভ থেকে উপকৃত হতে পারবে।
ইউক্রেনের ফার্স্ট ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সুইরিডেনকো জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটি পেয়েছেন এবং এর ওপর ভিত্তি করে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছেন। তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে জনসমক্ষে আলোচনা করলে তা দেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
এদিকে, একটি মানবাধিকার সংস্থা ‘গ্লোবাল উইটনেস’ এই প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা করেছে। সংস্থাটি বলছে, এই শর্তগুলো ইউক্রেনকে শোষণ করার শামিল এবং এটিকে তারা নব্য-উপনিবেশবাদ হিসেবে দেখছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার এই প্রস্তাব এবং খনিজ সম্পদ বিষয়ক মার্কিন প্রস্তাব ইউক্রেন যুদ্ধের একটি জটিল দিক উন্মোচন করে। একদিকে যেমন শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, তেমনই বিভিন্ন পক্ষ তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয়, এখন সেটাই দেখার বিষয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান