পুতিনের কাছে হার মানছেন ট্রাম্পও? বিশ্লেষণে চাঞ্চল্যকর তথ্য!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার বিষয়। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে, তখন এই দুই নেতার মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং এর ফলাফল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

যদিও ট্রাম্প প্রশাসন রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিনের কূটনীতি এবং অভিজ্ঞতার কাছে তারা প্রায়ই পরাস্ত হচ্ছেন।

আলোচনার শুরুতেই একটি বিষয় স্পষ্ট যে, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টা খুব একটা ফলপ্রসূ হয়নি। বিভিন্ন কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও, এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

বরং, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন কৌশলগতভাবে আলোচনার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

পুতিনের দীর্ঘদিনের কেজিবির প্রশিক্ষণ এবং কূটনীতির নিজস্ব কৌশল তাকে এই বিষয়ে সাহায্য করে। তিনি বিস্তারিতভাবে আলোচনার প্রস্তুতি নেন এবং খুঁটিনাটি বিষয়ে তার গভীর মনোযোগ থাকে।

বিভিন্ন সময়ে আলোচনার টেবিলে তিনি তার প্রতিপক্ষের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন। যেমন, ২০১৮ সালে হেলসিঙ্কিতে এক বৈঠকে ট্রাম্পকে তিনি একটি ফুটবল উপহার দিয়ে বলেছিলেন, “এখন বল আপনার কোর্টে।”

বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুতিনের এই ধরনের পদক্ষেপগুলো কূটনীতিকে একটি খেলার মতো করে তোলে, যেখানে বিজয়ী এবং পরাজিত উভয়ই থাকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুতিনের এই কৌশল সম্ভবত ট্রাম্প প্রশাসনের দুর্বলতাগুলো ভালোভাবেই জানে। ট্রাম্প ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি আগ্রহী নন বলেই মনে হয়।

এমনকি তিনি এমনও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে ইউক্রেন রাশিয়ার অংশ হতে পারে। ফলে, পুতিন যদি আলোচনা দীর্ঘায়িত করেন, তবে ট্রাম্প হয়তো এই প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজে নিতে পারেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রেসিডেন্ট অতীতেও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ‘নতুন করে শুরু’ করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। জর্জ ডব্লিউ বুশ থেকে শুরু করে বারাক ওবামা পর্যন্ত, সবাই রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে চেয়েছেন।

কিন্তু সম্পর্কের গভীর কাঠামোগত পার্থক্য এবং স্বার্থের ভিন্নতার কারণে সেই চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যেকার সম্পর্ক একটি জটিল প্রতিদ্বন্দিতার সম্পর্ক। এই পরিস্থিতিতে উভয় দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাতের ঝুঁকিও রয়েছে।

তবে, এই পরিস্থিতিকে ‘প্রতিযোগিতামূলক সহাবস্থান’-এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যেতে পারে, যেখানে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক এবং কূটনৈতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু সামরিক সংঘাতের সম্ভাবনা কমিয়ে আনা হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে। উভয় দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক সব সময় জটিল এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে, এটা ধরেই সামনে এগোতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *