আমার কৈশোরের দিনগুলোয় সঙ্গীতের এক অন্যরকম স্বাদ এনেছিল কুইন ব্যান্ড। নব্বইয়ের দশকে যখন আমি তরুণ, তখন আমার জীবনে সঙ্গীতের গুরুত্ব ছিল অনেক।
সেই সময়ে কুইন ব্যান্ডের গানগুলো যেন আমার একাকীত্ব দূর করত। বিশেষ করে, ১৯৮০-এর দশকে জনপ্রিয় হওয়া এই ব্যান্ডের গানগুলো আমার কাছে আজও বিশেষভাবে প্রিয়।
সম্প্রতি, কুইন ব্যান্ডের ড্রামার রজার টেইলরের সাথে একটি সাক্ষাৎকারের অভিজ্ঞতা এবং তাঁর একটি মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার স্মৃতিচারণ করে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে, যা আমার মনে গভীর রেখাপাত করেছে।
কুইন ব্যান্ডের প্রতি আমার ভালোবাসা শুরু হয় ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে, যখন ব্যান্ডটির প্রধান শিল্পী ফ্রেডি মার্কারি মারা যান। সেই সময়ে আমি ছিলাম সবেমাত্র এগারো বছরের কিশোরী।
টেলিভিশনে ‘টপ অফ দ্য পপস’-এর একটি অনুষ্ঠানে তাদের ‘দ্যাজ আর দ্য ডেজ অফ আওয়ার লাইভস’ গানটি শুনে আমার ভালো লেগে যায়। ফ্রেডি মার্কারিকে প্রথমবার দেখেছিলাম, তাঁর কণ্ঠের মাধুর্য আমাকে মুগ্ধ করেছিল।
এরপর ধীরে ধীরে কুইন আমার জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। তাদের গান, তাদের কনসার্ট—সবকিছুই আমার কাছে আকর্ষণীয় ছিল।
আমার কৈশোরের দিনগুলোতে, সঙ্গীতের প্রতি আবেগ প্রকাশ করাটা যেন কিছুটা কঠিন ছিল। সমাজের চোখে, পছন্দের গান নিয়ে আলোচনা করাটা তেমন স্বাভাবিক ছিল না।
তবে কুইন ব্যান্ডের গানগুলো আমাকে এক নতুন জগৎ উপহার দিয়েছিল, যা আমাকে আমার ভেতরের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে সাহায্য করে। সেই সময়ে, কুইন ব্যান্ডকে নিয়ে আমার উন্মাদনা বন্ধুদের মধ্যে গোপন রাখতে হতো।
কুইন ব্যান্ডের গানগুলো আমার কাছে শুধু গান ছিল না, বরং এক গভীর অনুভূতির প্রকাশ ছিল। তাদের গানের কথায় জীবনের নানা দিক, প্রেম, বিরহ, আনন্দ—সবকিছুই যেন ফুটে উঠত।
তাদের গান শুনে আমি এক ভিন্ন জগতে হারিয়ে যেতাম। আমার মনে আছে, একবার আমি একটি পুরোনো গানের দোকান থেকে কুইন ব্যান্ডের অনেক টেপ কিনেছিলাম।
বছর কয়েক আগে, আমি রজার টেইলরের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ পাই। তাঁর সাথে কথা বলার সময়, আমার কৈশোরের সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ছিল।
টেইলরের সাথে কথা বলার সময়, কুইন ব্যান্ডের প্রতি আমার ভালোবাসার গভীরতা নতুন করে অনুভব করি।
সাক্ষাৎকারের পর, আমি কর্নওয়ালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিই, যেখানে রজার টেইলরের একটি মূর্তি উন্মোচন করা হয়। মূর্তিটি ছিল একজন ড্রামারের, যা ছিল সত্যিই অসাধারণ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেক মানুষের সাথে কুইন ব্যান্ড এবং তাদের সঙ্গীত নিয়ে আলোচনা করি। সেই দিনের স্মৃতি আজও আমার মনে উজ্জ্বল হয়ে আছে।
কুইন ব্যান্ডের গানগুলো আমার জীবনে যে গভীর প্রভাব ফেলেছে, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। তাদের গান আমার কৈশোরের দিনগুলোকে আরও সুন্দর করে তুলেছিল।
সেই কারণে, ফ্রেডি মার্কারি এবং রজার টেইলরের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা সবসময় থাকবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান