অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে ‘নজিরবিহীন’ বন্যা, বিপর্যস্ত জনজীবন।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় সেখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, কিছু কিছু অঞ্চলে গত ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সেখানকার নদীগুলো ফুলেফেঁপে উঠেছে, বহু এলাকার রাস্তাঘাট জলের নিচে চলে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে।
বৃষ্টির পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে কোনো কোনো এলাকায় এক বছরে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়, তার প্রায় দ্বিগুণ বৃষ্টি হয়েছে কয়েকদিনের মধ্যে। স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কোনো কোনো স্থানে ৬০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এর ফলে সেখানকার কৃষি জমি এবং গবাদি পশুর ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। কুইন্সল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী ডেভিড ক্রিসাফুলি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি এই বন্যাকে ‘নজিরবিহীন’ আখ্যা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বন্যা পরিস্থিতি আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে। কারণ বন্যার পানি ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তর আরও জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার কারণে আগামী কয়েকদিন কুইন্সল্যান্ডের মধ্যাঞ্চলে ও দক্ষিণাঞ্চলে আরও বৃষ্টি হতে পারে।
বন্যার কারণে জুণ্ডা, স্টোনহেঞ্জ এবং উইন্ডোরা-র মতো কিছু শহরের পানির স্তর ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ বন্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
রাজ্যের কৃষি খাতে ক্ষতির পরিমাণ ‘হাজার হাজার’ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যার ফলে গবাদি পশুদের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।
এই বছর কুইন্সল্যান্ডে বেশ কয়েকটি বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। মার্চ মাসের শুরুতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ‘আলফ্রেড’-এর কারণে রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল।
এর আগে, বছরের শুরুতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ফলে ৭৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল, যাতে অন্তত একজন নিহত হন।
বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলির পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়ছে এবং ঘন ঘন বন্যা দেখা দিচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন