র‍্যাগিং: বন্ধুদের মাঝেও লুকিয়ে থাকতে পারে ভয়ঙ্কর বিপদ!

ছাত্রজীবনে র‍্যাগিংয়ের বিপদ: কিভাবে রুখতে পারে বিশ্ব?

বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে র‍্যাগিংয়ের মতো ঘটনাগুলো নতুন কিছু নয়। বছরের পর বছর ধরে, সিনিয়র শিক্ষার্থীদের দ্বারা কনিষ্ঠদের অপমান, নির্যাতন বা হয়রানির অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের একটি ঘটনা এই ধরনের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সচেতনতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

নিউ ইয়র্কের ওয়েস্টহিল হাই স্কুলের ১১ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা একটি পরিকল্পিত অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছিল, যা পরে একটি ফৌজদারি কার্যকলাপে পরিণত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে র‍্যাগিং বিরোধী আইন থাকলেও, এর সংজ্ঞা এবং প্রতিরোধের উপায় নিয়ে এখনো অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। সাধারণত, র‍্যাগিং এমন একটি কার্যক্রম যা কোনো ব্যক্তি বা শিক্ষার্থীদের একটি দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য অপমানিত করে, তাদের মর্যাদাহানি ঘটায়, অথবা বিপদগ্রস্ত করে তোলে।

এই ধরনের কাজগুলো অনেক সময় গোপনে করা হয়, যা প্রতিরোধ করা কঠিন করে তোলে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কলেজ জীবনে প্রবেশের আগে অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়। যারা ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ কোনো না কোনোভাবে র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছে।

র‍্যাগিংয়ের কারণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়ে, যা তাদের পড়াশোনার ওপর প্রভাব ফেলে এবং অনেক সময় তা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে। অ্যালকোহল সেবন, ঘুমের অভাব, এবং যৌন হয়রানির মতো ঘটনাগুলো র‍্যাগিংয়ের একটি অংশ।

এই সমস্যা সমাধানে, শুধুমাত্র আইন তৈরি করাই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি, সঠিক কাউন্সেলিং এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ। যুক্তরাষ্ট্রের একটি নতুন আইনে কলেজগুলোকে র‍্যাগিং সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে বলা হয়েছে, যা সম্ভাব্য শিক্ষার্থীদের জন্য সহায়ক হবে।

এছাড়াও, অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে এবং তাদের সন্তানদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনাগুলো থেকে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিতে পারি। র‍্যাগিং শুধুমাত্র একটি দেশের সমস্যা নয়, বরং এটি বিশ্বজুড়ে শিক্ষাব্যবস্থার একটি চ্যালেঞ্জ। ছাত্রজীবনে র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে, শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *