ইন্দোনেশিয়ার গায়িকা রারা সেকার, যিনি হারা নামেই পরিচিত, পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। সম্প্রতি, তিনি পরিবেশ বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে অক্সফোর্ডে এসেছিলেন, যেখানে তিনি তাঁর গান ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার কথা তুলে ধরেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষকে সচেতন করতে এবং প্রকৃতির কাছাকাছি ফিরিয়ে আনতে তাঁর এই প্রচেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
রারা সেকারের গানের মূল সুর প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ক নিয়ে। তিনি বিশ্বাস করেন, প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে এবং বর্জ্য কমিয়ে জীবন যাপন করার মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব।
তাঁর মতে, প্রকৃতির কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে, সম্মিলিতভাবে কাজ করার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে সাইকেল র্যালির আয়োজন করেছিলেন, যেখানে স্থানীয়দের প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোর আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
“কাবুত পুতিহ” (সাদা কুয়াশা) শিরোনামের একটি গান পরিবেশন করে রারা সেকার শ্রোতাদের মন জয় করেন। গানটি ১৯৭০-এর দশকে ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে লেখা হয়েছিল।
এই গানটি আজও অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করা কর্মীদের কাছে এটি একটি শক্তি হিসেবে কাজ করে।
ইন্দোনেশিয়া, যা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বৃষ্টিপাতের বনভূমি অঞ্চল, সেখানে পরিবেশগত অবক্ষয় একটি গুরুতর সমস্যা। বনভূমি ধ্বংস, কার্বন নিঃসরণ, এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশটির পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, গত কয়েক দশকে প্রায় ৭ কোটি ৪০ লক্ষ হেক্টরের বেশি বনভূমি ধ্বংস হয়েছে, যা জার্মানির দ্বিগুণ।
রারা সেকারের মতে, প্রকৃতির প্রতি আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য তাঁর এই প্রচেষ্টা শুধু ইন্দোনেশিয়ার জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে।
তাঁর এই আহ্বান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস