প্রকাশ্যে! ‘রকোরোনি’ পেঙ্গুইন: বিরল প্রজাতি, ক্যামেরাবন্দী!

আর্জেন্টিনার পাথুরে উপকূল অঞ্চলে বিরল ‘রোকরনি’ পেঙ্গুইনদের ক্যামেরাবন্দী করেছেন বিজ্ঞানীরা, যা প্রকৃতিতে নতুন প্রজাতির বিবর্তনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ‘সিক্রেটস অফ দ্য পেঙ্গুইনস’ নামক তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে এই বিরল দৃশ্য।

এই ঘটনা বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে, কারণ এর মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, কীভাবে পরিবেশগত চাপের কারণে ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরাও মিলিত হতে পারে এবং নতুন প্রজাতি তৈরি করতে সহায়তা করতে পারে।

গবেষক পাবলো “পোপি” বোরবোরোগলু, যিনি দীর্ঘদিন ধরে পেঙ্গুইন নিয়ে গবেষণা করছেন, তিনি এই বিরল ঘটনার সাক্ষী।

তিনি বলেন, “যখন দুটি ভিন্ন প্রজাতি মিলিত হয়ে প্রজনন করে, তখন ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। এই ঘটনা সত্যিই অসাধারণ।

এই গবেষণায় দেখা গেছে, রকহপার এবং ম্যাকারোনি পেঙ্গুইনদের মধ্যে একটি মিশ্র প্রজাতির পরিবার তৈরি হয়েছে, যাদের ‘রোকরনি’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে।

বোরবোরোগলু ব্যাখ্যা করেন, সম্ভবত সীমিত সঙ্গী নির্বাচনের সুযোগের কারণে এমনটা ঘটছে। যে অঞ্চলে একটি প্রজাতি কম থাকে, সেখানে অন্য প্রজাতির সঙ্গে মিলিত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

এছাড়াও, ম্যাকারোনি পেঙ্গুইনদের বড় শরীর, উজ্জ্বল ঝুঁটি এবং জোরালো কণ্ঠস্বর সম্ভবত রকহপারদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, যা তাদের মধ্যে মিলনের কারণ হতে পারে।

এই ঘটনার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা প্রকৃতির বিবর্তন প্রক্রিয়াকে খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন।

বোরবোরোগলুর মতে, যদি পরিবেশগত কারণে রকহপার এবং ম্যাকারোনি পেঙ্গুইনদের মধ্যে মিলন আরও বাড়তে থাকে, তাহলে এটি নতুন প্রজাতি গঠনের পথ খুলে দিতে পারে।

যদিও ‘রোকরনি’ শাবকদের টিকে থাকা কঠিন, কারণ তাদের বেশি খাদ্যের প্রয়োজন হয় এবং রকহপার মায়েদের জন্য তা কঠিন হয়ে পড়ে, তবে তাদের মধ্যে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অসাধারণ ক্ষমতা দেখা যাচ্ছে।

বর্তমানে বিশ্বের ১৮ প্রজাতির পেঙ্গুইনের অর্ধেকই আইইউসিএন রেড লিস্টে বিপদগ্রস্ত প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত।

জলবায়ু পরিবর্তন, অতিরিক্ত মাছ ধরা, দূষণ এবং বাসস্থান ধ্বংসের কারণে পেঙ্গুইনরা আজ হুমকির সম্মুখীন।

বোরবোরোগলু চান, এই ঘটনা পেঙ্গুইনদের প্রতি মানুষের সহানুভূতি বাড়াবে এবং তাদের সংরক্ষণে উৎসাহিত করবে।

তিনি মনে করেন, “পেঙ্গুইনদের জীবনযাত্রা আমাদের অনেক কিছু শেখায়।

তারা কঠিন পরিস্থিতিতেও টিকে থাকার জন্য অবিরাম চেষ্টা করে যায়। তাদের এই লড়াই আমাদের অনুপ্রাণিত করে।”

যদি এই পেঙ্গুইন পরিবার টিকে থাকে, তবে এটি প্রকৃতির এক নতুন রূপ উন্মোচন করবে, যা বিজ্ঞানীরা আগে দেখেনি।

পেঙ্গুইনদের জীবনযাত্রা এবং তাদের সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহীরা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ‘সিক্রেটস অফ দ্য পেঙ্গুইনস’ দেখতে পারেন।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *