যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ: মন্দার আশঙ্কায় বিলিয়নেয়ার, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাবের শঙ্কা
আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে, আর এর মধ্যেই মার্কিন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশিষ্ট বিনিয়োগকারী ও বিলিয়নেয়ার রে ডালিও। তাঁর মতে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বা বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত মন্দার দিকে যাচ্ছে, এমনকি পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
ডালিও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ হেজ ফান্ড, ব্রিজওয়াটার অ্যাসোসিয়েটস-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যদি এই পরিস্থিতি ভালোভাবে সামাল দেওয়া না যায়, তাহলে মন্দার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটতে পারে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট সম্পর্কে ডালিও’র সঠিক পূর্বাভাস ছিল।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধ বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ। ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, যার ফলস্বরূপ বিশ্বজুড়ে বাজারের অস্থিরতা বেড়েছে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে শুল্কের মেয়াদ ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, তবে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক বৃদ্ধি, ঋণের বোঝা এবং বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষমতার পরিবর্তন—এসব বিষয় অস্থিরতা তৈরি করছে। ডালিও মনে করেন, শুল্কনীতি যদি স্থিতিশীলভাবে বাস্তবায়ন করা না হয়, তাহলে তা মারাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তিনি এর আগে এই শুল্কনীতিকে উৎপাদন ব্যবস্থার ‘ভেতরে পাথর ছোড়ার’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
গোল্ডম্যান স্যাকসের অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসার সম্ভাবনা ৪৫ শতাংশ। তবে, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে এই আশঙ্কা আরও বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিলে তার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়বে, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন রপ্তানিমুখী খাত মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরশীল। তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে।
রে ডালিও-র বর্তমান সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার। তাঁর এই সতর্কবার্তা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন