ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এক ছাত্র, যিনি সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পেয়েছেন, তিনি ভারমন্টে অভিবাসীদের আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য একটি নতুন উদ্যোগ শুরু করেছেন। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে এক মিলিয়ন মার্কিন ডলারের তহবিল সংগ্রহের ঘোষণা করা হয়েছে।
মোশেন মাহদাওয়ি নামের ওই ছাত্র ইসরায়েলের গাজায় চালানো যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন, যার কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
মোশেন মাহদাওয়ি, যিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভের প্রক্রিয়ার সময় গ্রেপ্তার হন। পরে আদালত তাকে মুক্তি দেন এবং তার মুক্তি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
জানা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন মাহদাওয়িকে তার রাজনৈতিক কার্যক্রমের কারণে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে চেয়েছিল। তাদের মতে, মাহদাওয়ীর এই কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি স্বরূপ।
তবে আদালত রায় দেন, সরকার মাহদাওয়ীকে তার মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার জন্য গ্রেপ্তার করেছে।
এই ঘটনার পরে, মাহদাওয়ি ভারমন্টের স্টেট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন। সেখানে তিনি এই উদ্যোগের ঘোষণা করেন।
এই সময় তার সাথে ছিলেন ভারমন্টের স্টেট ট্রেজারার মাইক পিয়েসিয়াক, সিনেট মেজরিটি লিডার কেশা রাম হিন্সডেল এবং আরও অনেকে। এই উদ্যোগে একটি ‘ভারমন্ট ইমিগ্রেশন লিগ্যাল ডিফেন্স ফান্ড’ তৈরি করা হবে, যা অভিবাসীদের আইনি সহায়তা প্রদান করবে।
এর মাধ্যমে যারা বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন, আটক হয়েছেন অথবা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন, তাদের সহায়তা করা হবে।
এই ফান্ড তৈরি ও পরিচালনার জন্য আইনজীবী এবং সমাজকর্মীদের একটি দল কাজ করবে। কেশা রাম হিন্সডেল বলেন, “আমরা আমাদের জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কাজ করব, তাদের জাতীয়তা, অভিবাসন অবস্থা বা ভাষার বিষয়ে কোনো ভেদাভেদ করব না।”
ভারমন্টের আইনপ্রণেতা এবং গভর্নর ফিল স্কট মাহদাওয়ীর গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা করেছেন।
গভর্নর স্কট বলেন, “আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের অন্ধকারে কাজ করার বা মুখোশের আড়ালে থাকার কোনো অধিকার নেই।”
মোশেন মাহদাওয়ি ফিলিস্তিনের একটি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
সম্প্রতি তার মুক্তি পাওয়ার ফলে তিনি ভারমন্টের বাইরে গিয়ে নিউইয়র্কে তার স্নাতক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাহদাওয়ি জানান, কারাগারে তিনি মেক্সিকোর একজন কৃষকের সঙ্গে ছিলেন যিনি প্রতিদিন প্রার্থনা করতেন।
মাহদাওয়ি বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে যেন তার সেই বন্ধুর প্রার্থনার ফল পাওয়া গেল। তিনি আরও বলেন, এটি ভালোবাসা, যত্ন এবং মানবতার উদাহরণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন