একক প্রদর্শনীতে রেনে মাটিচ: ক্যামেরার ভাষায় ব্যক্তিগত অনুভূতি!

রেনে মাটিচ: ২০২৩ সালের টার্নার পুরস্কারের জন্য মনোনীত, অন্তরঙ্গ মুহূর্তের আলোকচিত্রশিল্পী।

যুক্তরাজ্যের অন্যতম সম্মানজনক পুরস্কার, টার্নার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন রেনে মাটিচ। সম্প্রতি লন্ডনের আর্কেডিয়া মিসা গ্যালারিতে মাটিচের আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। এই প্রদর্শনীটিতে শিল্পী তাঁর ব্যক্তিগত জীবন এবং সমাজের বিভিন্ন দিক ক্যামেরাবন্দী করেছেন, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়।

আলোচ্য প্রদর্শনীটি মাটিচের একটি ব্যক্তিগত সফর। এখানে সাদা ক্যানভাসের উপর স্থাপন করা হয়েছে ছোট আকারের ছবিগুলো। সাদা দেয়ালের প্রেক্ষাপটে ছবিগুলোর গাঢ় বর্ণ দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মাটিচের ছবিতে ফুটে উঠেছে শ্বেতাঙ্গ সমাজে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের জীবনযাত্রা। এই ছবিগুলো যেন তাদের ‘ইন-বিটুইন’ অবস্থার প্রতিচ্ছবি, যা শিল্পী নিজে ‘রুডনেস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

প্রদর্শনীতে ব্যবহৃত ছবিগুলো মূলত সিলভার জেলাটিন প্রিন্ট। নিজের ব্যক্তিগত জগৎ, পরিবার, বন্ধু এবং কাছের মানুষদের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রদর্শনী। শিল্পী তাঁর ক্যামেরায় ধারণ করেছেন প্রিয়জনদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো। একটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি বন্ধু ক্যাম্পবেলের মুখ স্পর্শ করছেন। এছাড়াও, বন্ধুদের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি, যেমন- অন্তঃসত্ত্বা এক বন্ধুর ছবি, যা ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশ করে।

মাটিচের ছবিতে আলো-ছায়ার খেলা বিশেষভাবে লক্ষণীয়। ছবিতে নিজেদের অনুপস্থিতির ইঙ্গিতও রয়েছে, যা দর্শকদের আত্ম-অনুসন্ধানে উৎসাহিত করে। প্রদর্শনীতে শিল্পী তাঁর পরিচিত কিছু সাংস্কৃতিক বস্তুর ছবিও রেখেছেন, যা তাঁর পরিচয়কে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করে। এর মধ্যে রয়েছে জেমস Baldwin এর বই, Nina Simone এর একটি গ্রামোফোন রেকর্ড এবং সেন্ট মার্টিন ডি পোরেসের মূর্তি। সেন্ট মার্টিন ডি পোরেস মিশ্র বর্ণের মানুষের আশ্রয়দাতা হিসেবে পরিচিত।

ছবিগুলোর বিন্যাসও বেশ আকর্ষণীয়। কিছু ছবি একে অপরের দিকে মুখ করে রয়েছে, আবার কিছু ছবিতে ভিন্নতা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। একটি দৃশ্যে দেখা যায়, নাট্যকার ট্র্যাভিস আলাবানজা সাদা তোয়ালে দিয়ে শরীর ঢেকে রেখেছেন। আরেক ছবিতে, লন্ডনের একটি এলজিবিটিকিউআইএ+ আর্টস সংস্থার মঞ্চের পেছনের দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও, শিল্পী মিয়াকে রান্নাঘরের টেবিলে দেখা যায়, যা যেন ক্যারি মেই উইমসের প্রতি শ্রদ্ধা।

আলোচনার শেষে, দর্শকদের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো, প্রতিটি ছবি যেন শিল্পীর ক্যামেরার জন্য একটি ব্যক্তিগত পরিবেশনা। এখানে শিল্পীর ব্যক্তিত্ব এবং তাঁর চারপাশের মানুষের প্রতিচ্ছবি অত্যন্ত নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

প্রদর্শনীটি আগামী ৩ জুন পর্যন্ত আর্কেডিয়া মিসা, লন্ডনে চলবে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *