যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রিপাবলিকানদের একটি কৌশলগত চাল নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তারা বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নতুন করে নির্ধারণ করতে চাইছে, যা তাদের আরও বেশি আসন নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
এই প্রক্রিয়ায় ডেমোক্র্যাটরাও পিছিয়ে থাকতে রাজি নয়, তারাও তাদের নিয়ন্ত্রিত রাজ্যগুলোতে একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে। এই ঘটনার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপরও পড়তে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের লড়াইয়ে নেমেছে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল—রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট। আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জন্য হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা ধরে রাখার সুযোগ তৈরি হতে পারে, যদি তারা কিছু আসন নিজেদের দখলে নিতে পারে।
কিন্তু রিপাবলিকানরা এখন থেকেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নিজেদের অনুকূলে আনতে চাইছে। তারা বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নতুন করে তৈরি করতে চাইছে, যাতে তাদের দল সুবিধা পায়।
টেক্সাসে রিপাবলিকানদের এমন একটি প্রচেষ্টার কথা শোনা যাচ্ছে, যেখানে তারা ডেমোক্রেটদের আসনগুলোতে ভাগ বসিয়ে আরও কিছু আসন নিজেদের জন্য নিশ্চিত করতে চাইছে। ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিসও অনুরূপ পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছেন।
ওহাইও এবং মিসৌরির মতো রাজ্যগুলোতেও একই ধরনের পরিকল্পনা চলছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো দলের দ্বারা নির্বাচনী এলাকার সীমানা নিজেদের সুবিধামতো তৈরি করাকে ‘গেরিম্যান্ডারিং’ বলা হয়। রিপাবলিকানদের এই পদক্ষেপ সফল হলে তারা কিছু আসনে সুবিধা পেতে পারে, তবে এর বিপরীত ফলও হতে পারে।
কারণ, এতে দলটির জন্য কিছু ঝুঁকিপূর্ণ আসন তৈরি হতে পারে, যেখানে ডেমোক্র্যাটরা জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরাও বসে নেই। তারা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সির মতো রাজ্যগুলোতে রিপাবলিকানদের মোকাবিলা করার জন্য অনুরূপ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত হচ্ছে।
তাদের যুক্তি হলো, প্রতিপক্ষের এমন কৌশলের জবাব দিতে তারাও পিছপা হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি বেশ জটিল। কিছু রাজ্যে এই কাজটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখার চেষ্টা করে।
তবে অনেক রাজ্যে ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছানুযায়ী সীমানা পুনর্নির্ধারণের অভিযোগ রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের নিয়ন্ত্রণ—তা সামান্য ব্যবধানে হলেও—গুরুত্বপূর্ণ। যারা জয়ী হবে, তারা আইন প্রণয়ন এবং নীতি নির্ধারণে প্রভাবশালী হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্ব অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, এই নির্বাচনের ফলাফল এবং দুই দলের কৌশল বিশ্ববাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন