ট্রান্স ইস্যু: বিতর্কের আগুনে, বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের পুরোনো অস্ত্র!

**মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ‘ট্রান্স বিরোধী’ প্রচারণার কৌশল**

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে রিপাবলিকান পার্টি ‘ট্রান্সজেন্ডার’ ইস্যুকে হাতিয়ার করে প্রচারণা শুরু করেছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, ভোটারদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করা এবং ডেমোক্রেটদের দুর্বল করা।

এই প্রচারণার অংশ হিসেবে, রিপাবলিকানরা মূলত তাদের পুরোনো কৌশলগুলোকেই আবার সামনে আনছে। তারা বিশেষভাবে ‘তারা/তাদের’ (they/them) সর্বনাম ব্যবহার এবং ট্রান্সজেন্ডার খেলোয়াড়দের বিষয়টিকে তুলে ধরছে। তাদের যুক্তি হলো, ডেমোক্রেটরা ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুকে সমর্থন করে সাধারণ মানুষের অধিকারের প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে না।

কয়েকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, রিপাবলিকানদের এই ধরনের প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হলো, ভোটারদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তাদের ভোট নিজেদের দিকে টানা। তারা বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গ পুরুষ, হিস্পানিক এবং মায়েদের ভোট নিজেদের দিকে টানতে চাইছে।

অন্যদিকে, ডেমোক্রেটরা বলছেন, রিপাবলিকানরা মূল সমস্যাগুলো থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য এসব বিষয় সামনে আনছে। ডেমোক্রেটদের মতে, রিপাবলিকানরা জনগণের মৌলিক অধিকারের পরিবর্তে, এমন সব বিষয় নিয়ে বেশি আগ্রহী যা অভিভাবকদের এবং চিকিৎসকদের বিবেচনা করা উচিত।

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রাজ্যে, যেমন নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া এবং ভার্জিনিয়াতে, এই ধরনের প্রচারণা জোরেশোরে চালানো হচ্ছে। রিপাবলিকানরা সেখানকার ডেমোক্রেট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ট্রান্সজেন্ডার নীতিকে সমর্থন করার অভিযোগ আনছেন।

উদাহরণস্বরূপ, নর্থ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান পার্টি প্রাক্তন গভর্নর রয় কুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছে, তিনি “ট্রান্সজেন্ডার মতাদর্শকে সমর্থন করেন”। একইসঙ্গে, তারা এমন সব বিলের বিরোধিতা করেছেন যা ছেলেদের মেয়েদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণে বাধা দেয়। জর্জিয়াতেও একই ধরনের বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে, যেখানে ট্রান্সজেন্ডার খেলোয়াড়দের বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে।

ডেমোক্রেটদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রিপাবলিকানরা আসলে স্বাস্থ্যখাতে অর্থ কাটছাঁট এবং হাসপাতাল বন্ধের মতো বিষয়গুলো থেকে মনোযোগ ঘোরাতেই এই কৌশল নিচ্ছেন।

তবে, এই পরিস্থিতিতে ডেমোক্রেটদের মধ্যে ভিন্নমত দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ মনে করেন, ট্রান্সজেন্ডার খেলোয়াড়দের মেয়েদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের বিষয়টি “অন্যায্য”। আবার কেউ কেউ এই ইস্যুতে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার পক্ষে।

যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার সংস্থা (Human Rights Campaign – HRC) বিভিন্ন রাজ্যে ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকারের পক্ষে সমর্থন বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। তারা মনে করে, মানুষের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরার মাধ্যমে জনগণের সমর্থন আদায় করা সম্ভব।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনগুলোতে এই প্রচারণার ফল কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *