খাবার দোকান বন্ধের হুমকিতে! বাড়ছে খরচ, কমছে ক্রেতা!

বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের খরচ কমানোর প্রবণতার কারণে রেস্তোরাঁ ব্যবসার টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। একদিকে যেমন খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে, তেমনই মানুষজন এখন আগের থেকে অনেক হিসেবি।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবসায়ীরাও কি একই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন?

যুক্তরাষ্ট্রের একটি পুরোনো চিলি রেস্তোরাঁ, আইক’স চিলি, ১১৭ বছর ধরে টিকে আছে। মহামন্দা, কোভিড-১৯ অতিমারি এবং একবারের অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতির ধাক্কাও তারা সামলেছে।

কিন্তু তাদের ব্যবসার অংশীদার লিন ওয়েড জানাচ্ছেন, ২০২৩ সাল তাদের জন্য আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ, গরুর মাংসের দাম এক দশক আগের তুলনায় প্রায় ২১ শতাংশ বেড়েছে।

শুধু গরুর মাংস নয়, কফি, ডিম এবং কোকো-র মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তথ্য অনুযায়ী, খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়েছে, যা ব্যবসার জন্য উদ্বেগের কারণ।

রেস্তোরাঁগুলোর মুনাফার মার্জিন সাধারণত ৩ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে থাকে। তাই খরচ বাড়লে তাদের পক্ষে ব্যবসা চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।

খরচ বাড়ার পেছনে শুধু খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধিই একমাত্র কারণ নয়। কর্মী নিয়োগও একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভালো কর্মী খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে, ফলে অনেক রেস্তোরাঁকে হয় বেশি বেতন দিতে হচ্ছে, না হয় কর্মী সংকটের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে।

এর ওপর রয়েছে অভিবাসন সংক্রান্ত জটিলতা, যা শ্রমিক সরবরাহ আরও কঠিন করে তুলেছে।

ভোক্তাদের দিক থেকেও চাপ বাড়ছে। মানুষ এখন আগের মতো বাইরে খেতে যাচ্ছে না।

অন্যদিকে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে তারা এখন খরচ কমাতে বাধ্য হচ্ছে। অনেক পরিবার হয় তাদের সকালের নাস্তার মেনু পরিবর্তন করছে, অথবা তারা বাড়িতেই খাবার তৈরি করতে চাইছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে রেস্তোরাঁগুলোর পক্ষে আগের মতো দাম নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

কারণ, একদিকে যেমন তাদের বিক্রি কমছে, তেমনই বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের খরচ।

তবে সব রেস্তোরাঁর জন্য পরিস্থিতি একই রকম নয়। নিউ ইয়র্ক সিটিতে, বিশেষ করে ব্রুকলিনে, রেস্তোরাঁগুলোতে আগের চেয়ে ভিড় বাড়ছে।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের অন্য অনেক অঞ্চলের রেস্তোরাঁগুলোতে ব্যবসা কমে গেছে, কারণ ভোক্তারা এখন সাশ্রয়ী মূল্যের দিকে ঝুঁকছেন।

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবসায়ীদের জন্যও একটি সতর্কবার্তা।

বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লে এবং ভোক্তারা খরচ কমাতে শুরু করলে, বাংলাদেশের রেস্তোরাঁগুলোকেও কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হতে পারে।

তাই, তাদের ব্যবসার কৌশল নতুন করে সাজাতে হবে, যাতে তারা এই প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে পারে।

সম্ভবত খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা, কর্মী নিয়োগের সমস্যা সমাধান এবং গ্রাহকদের রুচি ও চাহিদার প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া এখন সময়ের দাবি।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *