ঘুমের আগে পায়ে অস্বস্তি? এই রোগটি দায়ী!

ঘুমের মধ্যে পায়ে অস্বস্তি? অস্থির পা- সিন্ড্রোম (Restless Legs Syndrome – RLS) হতে পারে এর কারণ।

রাতে ঘুমের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কি পায়ে একটা অস্বস্তি বোধ হয়? কিছুতেই যেন সোজা হয়ে শুয়ে থাকতে পারছেন না, পা নাড়াচাড়া করতে ইচ্ছে করছে? এই সমস্যাটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘অস্থির পা সিন্ড্রোম’ বা রেস্টলেস লেগস সিন্ড্রোম (Restless Legs Syndrome – RLS)। এটি স্নায়ু-সংক্রান্ত একটি সমস্যা, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং দিনের বেলাতেও অনেককে ক্লান্ত করে তোলে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের পায়ে এক ধরনের অস্বস্তি হয়, যা হয়তো “পোকা হাঁটা” বা “শিরশির” করার মতো অনুভূতি হতে পারে। অনেক সময় এই অনুভূতি পায়ের পেশীতে ব্যথা, জ্বালা বা চুলকানির মতোও মনে হতে পারে।

এর ফলে অস্থিরতা বাড়ে এবং পা নাড়তে ইচ্ছে করে। এই সমস্যা সাধারণত রাতে বা বিশ্রাম নেওয়ার সময় বাড়ে এবং হাঁটাচলা করলে কিছুটা কমে আসে।

অস্থির পা সিন্ড্রোমের মূল কারণ এখনো পর্যন্ত অজানা। তবে কিছু বিষয় এই রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। যেমন, যাদের পরিবারে এই সমস্যা আছে, তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

শরীরে আয়রনের অভাব হলেও এই রোগ হতে পারে। এছাড়াও, গর্ভবতী মায়েদের, কিডনি রোগী, যারা নিয়মিত ডায়ালিসিস করেন, এবং যাদের রক্তাল্পতা (Anemia) রয়েছে, তাদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কিছু বিশেষ ওষুধ সেবনের কারণেও এই রোগ হতে পারে।

চিকিৎসকরা বলছেন, জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এনে এই সমস্যার মোকাবিলা করা যেতে পারে।

  • অ্যালকোহল ও ক্যাফিন সেবন কমানো।
  • পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা。
  • আয়রনের অভাব থাকলে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।
  • পায়ে ম্যাসাজ করা বা গরম/ঠান্ডা সেঁক দেওয়া।

যদি জীবনযাত্রার পরিবর্তনে কাজ না হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অনেক সময়, চিকিৎসকেরা আলফা-টু-ডেল্টা লিগ্যান্ডস (alpha2-delta ligands) জাতীয় ওষুধ দেন। এছাড়া, গুরুতর ক্ষেত্রে স্বল্পমাত্রার ওপিওয়েড ওষুধ ব্যবহারেরও প্রয়োজন হতে পারে।

মনে রাখতে হবে, অস্থির পা সিন্ড্রোম (Restless Legs Syndrome – RLS) একটি গুরুতর সমস্যা, যা আপনার ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দকে ব্যাহত করতে পারে এবং দিনের বেলায়ও আপনাকে ক্লান্ত করে তুলতে পারে।

তাই, যদি আপনার এমন কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, যা ঘুমের সমস্যা তৈরি করছে, তবে দেরি না করে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে আপনি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: সিএনএন (CNN)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *