যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্যে, এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে গ্ল্যাস্টনবারি শহর। অবসরপ্রাপ্ত ৭৩ বছর বয়সী এক পুলিশ গোয়েন্দা, মেরি নটারানজेलोকে তাঁর নিজের বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
প্রায় সাত মাস আগে, ২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ফেব্রুয়ারিতে তাঁর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়, তবে মৃত্যুর কারণ এখনো অজানা।
মেরি নটারানজেলো ১৯৯৬ সালে ব্রিজপোর্ট পুলিশ বিভাগ থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাড়িটি আবর্জনায় পরিপূর্ণ ছিল, যার কারণে তাঁকে খুঁজে বের করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে অনুসন্ধানকারীদের।
বাড়ির প্রবেশপথের কাছে প্রায় ছয় ফুট উঁচু আবর্জনার স্তূপ ছিল। ঘরটির ভেতরে পাখির খাঁচা এবং জীবিত ইঁদুরও পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর কঙ্কালসার দেহাবশেষ পাওয়ার কারণে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
খবর অনুযায়ী, মেরির এক বন্ধু, যিনি তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন, তিনিই প্রথমে কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর খোঁজ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। বন্ধুটি জানিয়েছিলেন, জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে মেরিকে পেটে ব্যথা, বমি এবং পরে পড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
এরপর পুলিশ কয়েকবার তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়। অতিরিক্ত আবর্জনার কারণে অনুসন্ধান চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। অবশেষে, একটি খননযন্ত্র এবং শ্রমিক দল নিয়োগ করে বাড়ির আবর্জনা সরিয়ে তাঁর দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।
গ্ল্যাস্টনবারি পুলিশ বিভাগের প্রধান মার্শাল পোর্টার এই ঘটনাকে ‘tragic’ এবং ‘বিস্ময়কর’ বলে উল্লেখ করেছেন। মেরির এক বন্ধু এবং প্রাক্তন সহকর্মী প্যাটি স্টিভস এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি জানান, মেরি মানুষ হিসেবে ভালো ছিলেন এবং প্রাণীদের খুব ভালোবাসতেন। তাঁর মধ্যে কিছু অদ্ভুত অভ্যাস ছিল, তবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত আবেগপ্রবণ এবং ধর্মভীরু।
প্যাটি আরও জানান, তিনি মেরিকে তাঁর অতিরিক্ত জিনিসপত্র জমিয়ে রাখার বিষয়ে কথা বলতে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু মেরি তাতে রাজি হননি।
এই ঘটনাটি একদিকে যেমন শোকের, তেমনই মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য এবং একাকীত্বের বিষয়টিও সামনে নিয়ে আসে। কোনো ব্যক্তির অতিরিক্ত জিনিসপত্র জমিয়ে রাখার প্রবণতা (hoarding) একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, যা তাঁর জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তোলে এবং সামাজিক সম্পর্কগুলোতেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল