কর্মীদের আচরণে নজর, বোনাস দিতে ‘কর্ম’ ব্যবস্থা রিভোলিউটের!

ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফিনটেক কোম্পানি, রেভোলিউট (Revolut), তাদের কর্মীদের কর্মদক্ষতা নিরীক্ষণের জন্য ‘কর্মা’ নামের একটি বিশেষ ব্যবস্থা চালু করেছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্মীদের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ম-কানুন মানার ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়, যা তাদের বোনাস নির্ধারণে প্রভাব ফেলে।

সম্প্রতি প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রেভোলিউটের মুনাফা গত বছর ১৪৮ শতাংশ বেড়েছে, যা প্রায় ১ বিলিয়ন পাউন্ডে (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ১৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি) দাঁড়িয়েছে। মূলত গ্রাহক-সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সম্পদ ও ক্রিপ্টোকারেন্সি (cryptocurrency) ট্রেডিং থেকে আয় বাড়ার কারণে এই উল্লম্ফন হয়েছে।

‘কর্মা’ ব্যবস্থাটি ২০২০ সালে চালু করা হয়। এই পদ্ধতিতে কর্মীদের ঝুঁকি ও নিয়ম-কানুন মেনে চলার বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর ভিত্তিতে কর্মীদের পয়েন্ট দেওয়া হয় এবং এই পয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে তাদের বোনাস নির্ধারিত হয়।

কর্মীদের দলগত কর্মক্ষমতার ভিত্তিতেও এই পয়েন্টের হেরফের হয়। রেভোলিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘কর্মা’ একটি ‘ফিডব্যাক লুপ’-এর মতো কাজ করে, যা ভালো আচরণকে পুরস্কৃত করে এবং ভুলগুলি সংশোধন করতে সাহায্য করে।

এই পদক্ষেপটি রেভোলিউটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অতীতে তাদের বিরুদ্ধে দুর্বল কমপ্লায়েন্স (compliance) এবং কর্মীদের প্রতি খারাপ আচরণের অভিযোগ উঠেছিল। হিসাবরক্ষণ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম ভাঙার কারণে তাদের যুক্তরাজ্যে ব্যাংকিং লাইসেন্স পেতেও দেরি হয়েছিল।

তবে কোম্পানিটি বর্তমানে এই সমস্যাগুলো সমাধান করেছে এবং কর্মপরিবেশ উন্নত করার চেষ্টা করছে।

রেভোলিউটের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের ‘কর্মা’ ব্যবস্থা ঝুঁকি এবং কমপ্লায়েন্সের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করে। এই ব্যবস্থা কর্মীদের ভালো কাজের স্বীকৃতি দেয় এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সংস্কৃতি তৈরি করতে সহায়তা করে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে, রেভোলিউটের ঝুঁকি ও কমপ্লায়েন্স সম্পর্কিত কর্মক্ষমতা ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রেভোলিউট মূলত বিনামূল্যে মুদ্রা বিনিময় সুবিধার ওপর ভিত্তি করে যাত্রা শুরু করেছিল। বর্তমানে এই কোম্পানির কর্মী সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি এবং তারা বিশ্বের ৩৬টিরও বেশি দেশে তাদের সেবা প্রদান করে।

তাদের বিভিন্ন সেবার মধ্যে রয়েছে – অর্থ স্থানান্তর, বাড়ি ভাড়া, ‘Buy-now pay-later’ ক্রেডিট ব্যবস্থা, ওয়েজ অ্যাডভান্স এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং ইত্যাদি।

সম্প্রতি রেভোলিউট ইউকে-তে ব্যাংকিং লাইসেন্স পেয়েছে এবং খুব শীঘ্রই তারা পূর্ণ অনুমোদন পাওয়ার প্রত্যাশা করছে। এর মাধ্যমে তারা শেয়ার বাজারে প্রবেশ করতে পারবে।

বর্তমানে কোম্পানিটির বাজার মূল্য প্রায় ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকার বেশি)।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *