অটিজমের কারণ অনুসন্ধানে স্বাস্থ্য বিভাগের পদক্ষেপ: সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমাধান?

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগ (এইচএইচএস) সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে অটিজমের কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি বৃহৎ গবেষণা কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এই ঘোষণা দিয়েছেন রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র।

ভ্যাকসিন বিরোধী হিসেবে পরিচিত কেনেডি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত একটি তত্ত্বের প্রচার করে আসছেন, যেখানে শিশুদের টিকা দেওয়ার কারণে অটিজম হয় বলে দাবি করা হয়েছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একসময় ধারণা প্রকাশ করেছিলেন যে, ভ্যাকসিনের কারণে অটিজম হতে পারে। যদিও বহু বছর ধরে গবেষণা শেষে বিজ্ঞানীরা এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছেন।

অটিজম একটি স্নায়ু-সংক্রান্ত বিকাশগত সমস্যা, যা মস্তিষ্কের ভিন্নতার কারণে ঘটে। এর ফলে ভাষা, শিক্ষা এবং সামাজিক বা আবেগিক ক্ষেত্রে শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এটা নিশ্চিত হয়েছে যে, শিশুদের টিকা দেওয়ার সঙ্গে অটিজমের কোনো সম্পর্ক নেই। ‘অটিজম স্পিকস’-এর মতো শীর্ষস্থানীয় অটিজম বিষয়ক সংস্থাগুলোও এই বিষয়ে একমত।

জিনগত কারণের পাশাপাশি, গর্ভকালীন সময়ে কীটনাশকের সংস্পর্শ, বায়ু দূষণ অথবা অপরিণত বা কম ওজনের শিশুর জন্ম-এর মতো পরিবেশগত বিষয়গুলোও অটিজমের কারণ হতে পারে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ (এনআইএইচ) প্রতি বছর অটিজম গবেষণায় প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ব্যয় করে।

অটিজম নির্ণয়ের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পেছনে সচেতনতা বৃদ্ধি, রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি পরিবর্তন এবং উন্নত স্ক্রিনিংয়ের মতো বিষয়গুলোও দায়ী। আগে শুধু গুরুতর সমস্যাযুক্ত শিশুদেরই অটিজম ধরা হতো।

কিন্তু বর্তমানে, অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারস (এএসডি) নামে পরিচিত হালকা ধরনের সমস্যাগুলোকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা অনেক বেশি দেখা যায়।

কেনেডি এই গবেষণা কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ডেভিড গিয়ারকে বেছে নিয়েছেন। ডেভিড গিয়ার দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাকসিন ও অটিজমের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করে আসছেন।

মেরিল্যান্ড রাজ্য কর্তৃপক্ষ এর আগে গিয়ারকে চিকিৎসক লাইসেন্স ছাড়াই একটি শিশুর চিকিৎসা করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল।

বাংলাদেশেও অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে এখনো প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এবং সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বাংলাদেশে অটিজম বিষয়ক সংগঠনগুলো এ বিষয়ে কাজ করছে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *