যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতে কোনো সাফল্য নেই, বিস্ফোরক মন্তব্য আরএফকে জুনিয়রের

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগের (Health and Human Services – HHS) নতুন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আলোচনায় রয়েছেন রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র। সম্প্রতি তিনি দেশটির স্বাস্থ্যখাতে কোনো উল্লেখযোগ্য সাফল্যের অভাবের কথা উল্লেখ করেছেন। তার মতে, গত কয়েক দশকে ঔষধ কোম্পানিগুলোর (pharmaceutical companies) হস্তক্ষেপের কারণে স্বাস্থ্যখাতে অনেক খারাপ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই মন্তব্যের জেরে বিতর্ক আরও বেড়েছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে কেনেডি জুনিয়রকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ফেডারেল স্বাস্থ্য সংস্থাগুলোর সর্বশেষ বড় সাফল্য কী ছিল?

জবাবে তিনি সরাসরি বলেন, “আমি মনে করি না, কোনো সাফল্য এসেছে।” তার মতে, এই সংস্থাগুলোতে গত ৩০ থেকে ৪০ বছরে অবনতি হয়েছে, যার কারণ হলো ঔষধ কোম্পানিগুলোর প্রভাব। তিনি বিশেষভাবে ওপিওড সংকট (opioid crisis)-এর কথা উল্লেখ করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে মাদকাসক্তি এবং অতিরিক্ত ওষুধ সেবনের গুরুতর সমস্যা।

কেনেডি জুনিয়রের এমন মন্তব্যের পর অনেকেই তার তীব্র সমালোচনা করেছেন। বিশেষ করে, সিনেট ফিনান্স কমিটির শুনানিতে তিনি তার ভ্যাকসিন-বিরোধী (vaccine) অবস্থান এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (Centers for Disease Control and Prevention – CDC) নতুন পরিচালককে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তের জন্য সমালোচিত হন।

উভয় দলের সিনেটররাই তার কাছে স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন করেন। যদিও কেনেডি জুনিয়র এই শুনানিকে “নাটক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।

এদিকে, সাবেক সিডিসি পরিচালক ড. টম ফ্রাইডেন বলেছেন, কেনেডি জুনিয়র সিডিসির ভ্যাকসিন বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটিতে “বিচিত্র” ও “অবৈজ্ঞানিক” ধারণা পোষণকারীদের নিয়োগ দিচ্ছেন। এছাড়াও, এক হাজারের বেশি বর্তমান ও প্রাক্তন স্বাস্থ্যকর্মী কেনেডি জুনিয়রের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

তাদের অভিযোগ, তার নেতৃত্ব আমেরিকার জনগণের স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলছে। কেনেডি জুনিয়র অবশ্য তার সিদ্ধান্তগুলোর পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন এবং যারা জনস্বাস্থ্য ও নির্ভরযোগ্য বিজ্ঞানের প্রতি উৎসর্গীকৃত। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, একটি আসন্ন প্রতিবেদনে শিশুদের মধ্যে অটিজমের (autism) সঙ্গে গর্ভাবস্থায় টাইলেনল (Tylenol) ব্যবহারের সম্ভাব্য সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হবে।

তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনো আসেনি। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যখাতে এই মুহূর্তে অস্থিরতা চলছে, যা বিভিন্ন মহলে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

বিশেষ করে, ঔষধ কোম্পানিগুলোর প্রভাব এবং ভ্যাকসিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে কেনেডি জুনিয়রের বিতর্কিত মন্তব্য পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতিগুলোতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যখাতের ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে, এখন সেটাই দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *