প্রয়াত ‘ডাক্তার কিল্ডারে’র নায়ক রিচার্ড চেম্বারলেইন: হারানো নক্ষত্রের বিদায়

বিখ্যাত অভিনেতা রিচার্ড চেম্বারলেইন আর নেই। গত শনিবার, হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের ওয়াইমানালোতে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৯০ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

তাঁর দীর্ঘদিনের সঙ্গী মার্টিন র্যাবেট এক বিবৃতিতে জানান, “আমাদের প্রিয় রিচার্ড এখন ফেরেশতাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন। তিনি মুক্ত, এবং আমাদের আগে চলে যাওয়া আপনজনদের কাছে উড়ে গেছেন।”

রিচার্ড চেম্বারলেইন, যিনি একসময় “ডাক্তার কিল্ডারে” চরিত্রে অভিনয় করে সারা বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেন, তাঁর সুদর্শন চেহারা এবং অভিনয়ের জন্য তরুণ প্রজন্মের কাছে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।

১৯৬০-এর দশকে টেলিভিশন জগতে তিনি ছিলেন অত্যন্ত পরিচিত মুখ। “ডাক্তার কিল্ডারে” ছিলো তরুণ ডাক্তারের জীবন ও কাজ নিয়ে তৈরি একটি জনপ্রিয় ধারাবাহিক। এই চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মন জয় করেছিলেন, এবং অনেক তরুণীর কাছে স্বপ্নের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন।

পরবর্তীতে, মিনিসিরিজের জগতে তিনি এক নতুন পরিচিতি লাভ করেন। “শোগুন” এবং “দ্যা থর্ন বার্ডস”-এর মতো জনপ্রিয় মিনিসিরিজে তাঁর অভিনয় আজও স্মরণীয় হয়ে আছে।

“দ্যা থর্ন বার্ডস”-এ ফাদার র্যালফ ডি ব্রিকাসার্ট চরিত্রে তাঁর অভিনয় ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা লাভ করে। এই সিরিজে তাঁর বিপরীতে ছিলেন র‍্যাচেল ওয়ার্ড। এই ধারাবাহিকটি বাংলাদেশেও একসময় বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।

অভিনয়ের পাশাপাশি, ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি আলোচনায় ছিলেন। বহু বছর ধরে তাঁর যৌন পরিচয় গোপন থাকলেও, ২০০৩ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনী “শ্যাটারড লাভ”-এর মাধ্যমে তিনি তাঁর সমকামিতার কথা প্রকাশ্যে আনেন।

রিচার্ড চেম্বারলেইনের জন্ম ১৯৩৪ সালের ৩১শে মার্চ, ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলসে। অভিনয়ের আগে তিনি চিত্রশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।

কোরিয়ান যুদ্ধে মার্কিন সেনাবাহিনীতে কাজ করার পর তিনি অভিনয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন।

“ডাক্তার কিল্ডারে”-এর সাফল্যের পর, তিনি চলচ্চিত্রেও নিয়মিত কাজ করেছেন। “দ্য মিউজিক লাভার্স”, “দ্য টাওয়ারিং ইনফার্নো”, এবং “দ্য থ্রি মাস্কেটিয়ার্স”-এর মতো চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয় আজও দর্শক হৃদয়ে গেঁথে আছে।

মঞ্চেও তিনি তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। “মাই ফেয়ার লেডি” এবং “দ্য সাউন্ড অফ মিউজিক”-এর মতো বিখ্যাত নাটকে তাঁর অভিনয় দর্শক মহলে প্রশংসিত হয়েছিল।

রিচার্ড চেম্বারলেইন তাঁর কাজের মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তাঁর প্রয়াণে চলচ্চিত্র জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *