ভ্রমণ বিষয়ক নতুন বইয়ে রিক স্টিভস: কীভাবে বদলে গেল তাঁর জীবন?

ভ্রমণ বিষয়ক লেখক রিক স্টিভস-এর ভ্রমণ বিষয়ক নতুন পরামর্শ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ভ্রমণকারীদের জন্য, বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। তাঁর মতে ভ্রমণের আসল মজা লুকিয়ে থাকে গন্তব্যের সংস্কৃতিতে মিশে যাওয়া এবং ভয়ের বিরুদ্ধে জয়ী হওয়ার মধ্যে।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বইয়ে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করেছেন, যা ভ্রমণ বিষয়ক ধারণা দেয়।

রিক স্টিভস, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ভ্রমণ বিষয়ক গাইডবই লিখছেন, টেলিভিশন শো করেন এবং ভ্রমণ বিষয়ক বিভিন্ন ট্যুর পরিচালনা করেন, তাঁর মতে, ভ্রমণের মাধ্যমে মানুষ নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে এবং ভয়ের থেকে দূরে থাকতে পারে। তাঁর নিজের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল ১৯৭০-এর দশকে, যখন তিনি “হিপ্পি ট্রেইল” ধরে ইউরোপ থেকে এশিয়া ভ্রমণ করেছিলেন।

সেই সময়ে বিভিন্ন মানুষের সাথে সাক্ষাৎ এবং তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার অভিজ্ঞতা তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। সেই ভ্রমণের স্মৃতি নিয়ে তিনি একটি নতুন বই লিখেছেন, যার নাম “অন দ্য হিপ্পি ট্রেইল: ইস্তানবুল টু কাঠমান্ডু অ্যান্ড দ্য মেকিং অফ আ ট্র্যাভেল রাইটার”।

এই বইয়ে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জার্নাল থেকে বিভিন্ন কথা তুলে ধরেছেন, যা তরুণ প্রজন্মের ভ্রমণকারীদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগায়।

রিক স্টিভস-এর মতে, ভ্রমণের সময় নতুন সংস্কৃতিকে আপন করে নেওয়া উচিত।

তিনি বলেন, “আমি যখন কোনো নতুন দেশে যাই, সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যাই। যেমন, বেলজিয়ামে গেলে চকোলেট, স্কটল্যান্ডে গেলে হুইস্কি, ইতালিতে গেলে রেড ওয়াইন এবং চেক রিপাবলিকে গেলে পিলসনার বিয়ার-এর স্বাদ উপভোগ করি।”

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে, আপনি যখন পুরান ঢাকায় যান, তখন সেখানকার বিরিয়ানি এবং সিলেটে গেলে চা-এর স্বাদ নিতে পারেন।

ভ্রমণে ভয়কে জয় করার বিষয়ে স্টিভস বলেন, “ভয় আমাদের সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

অনেক সময় কিছু রাজনৈতিক নেতা তাঁদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ভয়কে ব্যবহার করেন। তবে, ভ্রমণের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি, যা আমাদের ভয়কে জয় করতে সাহায্য করে।”

তরুণ ভ্রমণকারীদের জন্য রিক স্টিভসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ হলো:

  • হালকা ও পরিপাটি করে জিনিসপত্র নিন: খুব বেশি জিনিস সাথে না নেওয়াই ভালো।
  • সাংস্কৃতিক ধাক্কাকে গ্রহণ করুন: নতুন পরিবেশে গেলে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্মুখীন হতে পারেন, তবে হতাশ না হয়ে সেগুলোকে উপভোগ করুন।
  • নিজের আরামের জগৎ থেকে বেরিয়ে আসুন: নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পরিচিত গণ্ডির বাইরে যান।
  • গবেষণা করুন: ভ্রমণের আগে গন্তব্য সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন, যা আপনাকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে।

রিক স্টিভস মনে করেন, “ভ্রমণ কেবল একটি গন্তব্যে পৌঁছানো নয়, বরং এটি আত্ম-উন্নয়নেরও একটি উপায়।

গত বছর তাঁর ট্যুরগুলোতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেছে, যা তাঁর জনপ্রিয়তার প্রমাণ।”

ভ্রমণ বিষয়ক এই পরামর্শগুলো তরুণ প্রজন্মের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এটি তাঁদের নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করবে এবং তাঁদের জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করবে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল এন্ড লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *