লন্ডনের একটি গ্যালারিতে সম্প্রতি উন্মোচিত হয়েছে শিল্পী রিপ জার্মেইনের এক নতুন শিল্পকর্ম। এই শিল্পকর্মটি যুক্তরাজ্যে ‘ড্রিল’ সঙ্গীতের জগতে সহিংসতার চিত্র এবং এর সঙ্গে জড়িত শিল্পীদের কারাবাসের বিষয়টি তুলে ধরেছে।
শিল্পীর মতে, ড্রিল সঙ্গীত যেন সমাজের সহিংস রুচির প্রতিফলন, যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।
শিল্পী জার্মেইন তাঁর এই প্রদর্শনীতে ড্রিল সঙ্গীতের সঙ্গে জড়িত ৪২ জন শিল্পীর কারাবাসের ছবি ব্যবহার করেছেন। তাঁর মতে, গত কয়েক বছরে ড্রিল সঙ্গীতের জগৎ কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে, কারণ এর সঙ্গে জড়িত অনেক শিল্পীই এখন কারাগারে বন্দী।
প্রদর্শনীতে একটি প্রধান আকর্ষণ হল একটি কফিন, যা দর্শকদের ড্রিল সঙ্গীতের ভিডিও এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের কনটেন্ট দেখতে বাধ্য করে। দর্শকদের এমনভাবে এই সঙ্গীতের সঙ্গে পরিচিত করানো হয়, যা তাদের সহিংসতার প্রতি সমাজের স্বাভাবিক প্রবণতা উপলব্ধি করতে সহায়তা করে।
জার্মেইন মনে করেন, ড্রিল সঙ্গীতের মাধ্যমে সহিংসতার যে উদযাপন হয়, তা সমাজের একটি অংশকে আকৃষ্ট করে। তাঁর মতে, এই সঙ্গীতের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনের আকাঙ্ক্ষা অনেক শিল্পীকে অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, তিনি ক্যামডেনের র্যাপার সাসপেক্টের কথা উল্লেখ করেন, যিনি খুনের দায়ে পলাতক থাকা অবস্থায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেন।
এই শিল্পী তাঁর কাজে প্রায়ই সমাজের ক্ষমতা কাঠামোকে প্রশ্ন করেন এবং কৃষ্ণাঙ্গ সংস্কৃতির প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরেন। তাঁর মতে, পশ্চিমা সংস্কৃতি সহিংসতাকে ভালোবাসে এবং ড্রিল সঙ্গীত সেই সহিংসতার একটি প্রতিচ্ছবি।
তাঁর মতে, এই শিল্পের মাধ্যমে তিনি সমাজের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া এবং কিছু মানুষের জীবন ধারণের জন্য সহিংসতার আশ্রয় নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরতে চেয়েছেন।
রিপ জার্মেইনের এই শিল্পকর্ম দর্শকদের সহিংসতা এবং এর সঙ্গে জড়িত জীবন সম্পর্কে নতুনভাবে ভাবতে উৎসাহিত করে। শিল্পীর মতে, এটি শুধুমাত্র বিনোদন নয়, বরং এটি জীবন হারানোর একটি বাস্তব চিত্র।
এই প্রদর্শনীটি ১০ই মে পর্যন্ত লন্ডনের ‘ক্যাবিনেট’-এ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian